আল্ট্রাসনোগ্রাফি বিশেষজ্ঞ ডা. কাজী সাবিরা রহমান লিপির হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন
চট্টগ্রামের বেসরকারি মেডিকেল কলেজ আই এ এইচ এস / ইউ এস টি সি এর ৫ম ব্যাচের সাবেক শিক্ষার্থী, আল্ট্রাসনোগ্রাফি বিশেষজ্ঞ ডা. কাজী সাবিরা রহমান (লিপি) এর নির্মম হত্যার প্রতিবাদ ও অনতিবিলম্বে হত্যাকান্ডের কারন উদঘাটন করে হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত ৭ই জুন ২০২১ সকাল ১১টায় চট্টগ্রাম নগরীর আই এ এইচ আস/ ইউএসটিসি ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে ইউএসটিসির মেডিসিন ফ্যাকাল্টি, বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালইয়ের মেডিসিন ফ্যাকাল্টি আই এ এইচ এস’র সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন। মানববন্ধনে বক্তাগন, ডা. কাজী সাবিরা রহমান লিপি হত্যাকাণ্ডের যথাযথ কারণ উদঘাটন ও দোষীদেরকে অবিলম্বে গ্রেফতারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন। বক্তাগন বলেন ডাঃ কাজী সাবিরা রহমান (লিপি) একজন দক্ষ ও প্রতিভাবান চিকিৎসক ছিলেন, তিনি রাজধানীর গ্রিন লাইফ হাসপাতালের রেডিওলোজি বিভাগের চিকিৎসক ছিলেন। তিনি নিজ বাসভবনে রাতের আধারে ঘুমন্ত অবস্থায় আততায়ীর ধারালো ছুরির আঘাতে গত ৩০শে মে দিবাগত রতে নিহত হয়েছেন, তাঁর পিঠেও গলায় জখমের চিহ্নআছে। গত ৩১ মে সকালে ঢাকার কলা বাগানের ৫০/১ ফার্স্ট লেনের একটি ভবনের তৃতীয় তলার ফ্ল্যাটের আগুন নেভানোর পর সাবিরা রহমান লিপির (৪৭) লাশ উদ্ধার করা হয়। বক্তাগন আরো বলেন এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড ও পৈচাশিক, কারন খুনি তাকে হত্যা করে, খুনের আলামত নষ্টের জন্য ঘরে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। তার দুই সন্তান আজ মা হারা। বাবা-মা ও পরিবার পরিজন আজ শোকে বাকরুদ্ধ। মহান আল্লাহ তায়ালা তার পরিবারকে এই শোক বইবার তৌফিক দান করুন। বক্তাগন উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, এই হত্যাকান্ডের পর ৭ দিন অতিক্রান্ত হলেও পুলিশ এই হত্যার রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি, তাই সভা থেকে অনতিবিলম্বে এই ঘটনার প্রকৃত কারন উদঘাটন করে দোষীদেরকে গ্রেফতার পূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়ার জোর দাবী জানানো হয়। বিক্ষোভ সমাবেশ বক্তব্য রাখেন “আই এ এইচ এস” এর অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. এ.এম.এম. এহতেশামুল হক, বিএমএ চট্টগ্রাম শাখার ট্রেজারার ডা. আরিফুল আমিন, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) এর চট্টগ্রাম মহানগর শাখা সভাপতি অধ্যাপক ডা. মো. আব্বাস উদ্দিন, ডক্টরস ফর হেলথ এন্ড এনভায়রনমেন্ট চট্টগ্রাম শাখার সাধারন সম্পাদক ডা. আরিফ বাচ্চু, চট্টগ্রাম বিএমএ’র সাংস্কৃতিক ও আপ্যায়ন সম্পাদক ডা. সত্যজিত রায়, চট্টগ্রাম বিএমএ লাইব্রেরি এন্ড পাবলিকেশন সেক্রেটারি ডা. নূর উদ্দিন জাহেদ, ডা. জয় দেব ভৌমিক, ডা. করিম বিপ্লব, ডা. মাজেদ সুলতান, ডা. রাসেল ফরিদ চৌধুরী, ডা. রুম্মান, ডা. সামিনা আক্তার, ডা. কুমার বিশ্বজিৎ বিশু, ডা. নাজিম রাফিদ, ডা. মাশরাফি, ডা. মোস্তফা সাদমান, ডা. মোস্তফা আশিক প্রমুখ। উল্লেখ্য কলাবাগান থানার এএসআই এরশাদুল গত ৩১শে মে বলেন, ‘ঐ দিন দুপুর আড়াইটার দিকে আমরা বিষয়টি জানতে পারি। পরে ঐ বাসায় গিয়ে লাশ উদ্ধার করা হয়। তবে সুরতহাল রিপোর্টের পর পরিচয় সহ বিস্তারিত জানা যাবে।’ এরশাদুল বলেন, ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করছেন সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট ও ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। তবে ময়না তদন্তের পর মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। এদিকে ডা. সাবিরা রহমানের মৃত্যুর ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাবলেটের বাসিন্দা কানিজ ফাতেমা, তার এক বন্ধু ও বাসার দারোয়ান রমজানকে ডিবি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দ (ডিবি) পুলিশের রমনা বিভাগের উপ কমিশনার (ডিসি) এইচ এম আজিজুল হক বলেন, “ঐ চিকিৎসক বাসাটি ভাড়া নিয়ে থাকতেন এবং অন্য দুইটি রুম তিনি সাবলেট হিসেবে ভাড়া দিয়ে ছিলেন।” সাবলেটের ভাড়াটিয়া কানিজ ফাতেমাকে জিজ্ঞাসাবাদের তথ্য অনুযায়ী তিনি বলেন,গত রাত থেকে সবকিছু ঠিক ঠাক ছিল। সকালে কানিজ ফাতেমা যখন হাটতে বের হন তখন ডা. সাবিরার দরজা বন্ধ ছিল। পরে ফিরে এসে দেখেন যে, সাবিরার রুম থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে। পরে তিনি বাড়ির দারোয়ানকে ডাকেন এবং রুমের তালা ভেঙ্গে ভিতরে গিয়ে ডা. সাবিরার মৃতদেহ দেখতে পান। এইচ এম আজিজুল হক বলেন, পরে পুলিশকে খবর দিলে আমরা এসে দেখি যে তার গলায় একটি গভির জখম রয়েছে। এছাড়া তাঁর পিঠেও দুটি জখম পাওয়া গিয়েছে। ফলে আমাদের কাছে এটি অস্বাভাবিক এবং রহস্যজনক মনে হয়েছে। আমরা এ ঘটনার তদন্ত করছি এবং আশাকরি খুব অল্প সময়ের মধ্যে এ রহস্যের জট খুলবে।