পাহাড় ধসের ঝুঁকির কারণে তিন মাসের জন্য বন্ধ করে দেয়া বায়েজিদ সংযোগ সড়কে সাতদিনের মাথায় আবারো চালু
বর্ষায় পাহাড় ধসের শঙ্কায় বায়েজিদ-ফৌজদারহাট সংযোগ সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছিল চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-সিডিএ। গত মঙ্গলবার (৮ জুন) তিন মাসের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হলেও মাত্র ৭ দিনের মাথায় ঝুঁকি নিয়েই তা খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিডিএ। মঙ্গলবার (১৫ জুন) থেকে ওই সড়কে যান চলাচল আবারও চালু করা হয়েছে। নগরীর জাকির হোসেন সড়কে গাড়ির মাত্রাতিরিক্ত যানজটের কারণে বিভিন্ন মহলের অনুরোধে সড়কটি চালু করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিডিএ কর্মকর্তারা। সিডিএ’র প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস বলেন, বর্ষায় পাহাড়ধসের শঙ্কা ও বাকি কাজ সম্পন্ন করার জন্য সড়কটি বন্ধ করা হয়েছিল। পরে বিভিন্ন মহলের সুপারিশে এ সড়কটি আবারও চালু করা হয়েছে। তিনি বলেন, এ সড়কটি বন্ধ থাকার কারণে নগরের জিইসি মোড়, ২ নম্বর গেট ও খুলশী এলাকায় ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। সড়কটি খুলে দেওয়ার জন্য চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার ও চট্টগ্রাম চেম্বারের পরিচালক অনুরোধ করেছেন। সড়কটি খুলে দেওয়া হলেও এর দু পাশের দোকানপাট বন্ধ থাকবে। যেকোনো ধরনের জনসমাগম নিষিদ্ধ থাকবে। এ ছাড়া সড়কটির মাঝখানে কিছু ঝুঁকিপূর্ণ জায়গা আছে এবং সেখানের একটি অংশে কাজ চলছে। তাই ওই অংশের দুটি লেন বন্ধ থাকবে। সিডিএ কর্মকর্তারা বলছেন, ভারী বর্ষণের কারণে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি এলাকার তিনটি পাহাড় খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। কিছু অংশে পাহাড়ও ধসে পড়েছে। এসব পাহাড়ধস ঠেকাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঝুঁকিপূর্ণ ওই ৩টি অংশে মঙ্গলবার থেকে শুধুমাত্র দুই লেন বন্ধ থাকবে। আর পুরো সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক থাকবে। সিডিএ সূত্র জানায়, বায়েজিদ লিংক রোড তিন মাসের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হলে নগরের ২ নম্বর গেট থেকে জিইসি হয়ে খুলশী জাকির হোসেন রোড পর্যন্ত এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। তাই নগরের এসব সড়কে ভারী গাড়ির চাপ কমাতে সীমিত আকারে খুলে দেওয়া হচ্ছে বায়েজিদ লিংকা রোডটি। গত রোববার সিডিএ প্রকৌশল বিভাগের একটি প্রতিনিধি দল জিইসি, জাকির হোসেন রোড ও বায়েজিদ লিংক রোড পরিদর্শন শেষে বায়েজিদ লিংক রোড খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুন্ডের ফৌজদারহাট টোল রোডের মুখ থেকে বায়েজিদ বোস্তামি পর্যন্ত সংযোগ সড়ক নির্মাণ করেছে সিডিএ। এই সংযোগ সড়ক নির্মাণে দুই পাশের পাহাড় ৯০ ডিগ্রি খাড়া করে কাটায় যে কোনো সময় ধসের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।এ প্রকল্পের আওতায় রয়েছে একটি রেলওয়ে ওভারব্রিজ, ছয়টি ব্রিজ ও ১২টি কালভার্ট। প্রকল্পের ৬ কিলোমিটার ৪ লেনের রাস্তা নির্মাণে কাটা হয় ১৮টি পাহাড়। পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে আড়াই লাখ ঘনফুট পাহাড় কাটার অনুমোদন নেওয়া হলেও ১০ লাখ ৩০ হাজার ঘনফুট পাহাড় কাটে সিডিএ। এজন্য পরিবেশ অধিদপ্তর ১০ কোটি টাকা জরিমানাও করে সিডিএ’কে। এরপরও ঝুঁকিপূর্ণ খাড়া পাহাড়গুলো নতুন করে কাটার জন্য গত বছরের ২৩ মার্চ পরিবেশ অধিদপ্তরে ৩ লাখ ৩২ হাজার ঘনমিটার পাহাড় কাটার অনুমতি চেয়ে নতুন করে আবেদন করে সিডিএ। এ চিঠি পাওয়ার পর ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়গুলো কাটা ও সংরক্ষণ কিভাবে করা হবে, সে বিষয়ে সিডিএর কাছে বিশেষজ্ঞ মতামতসহ প্রতিবেদন চায় পরিবেশ অধিদপ্তর। এরপর সিডিএ’র প্রধান প্রকৌশলীর নেতৃত্বে প্রকল্পটির পরিচালক ও চুয়েটের দুই শিক্ষকের সমন্বয়ে চার সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। # ১৫.০৬.২০২১ চট্টগ্রাম #