রোহিঙ্গাকে জন্ম নিবন্ধন ও ভোটার বানানো ইসি কর্মচারী,সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
রোহিঙ্গা নারীর নাম ছিল রমজান বিবি। বাংলাদেশের ভোটার তালিকায় নাম উঠিয়ে তিনি হয়ে গেলেন লাকী আক্তার। তারপর সেই রোহিঙ্গা নারী লাকী আক্তার ও তার দুই মেয়ে তিনজনে বানিয়ে ফেলেন বাংলাদেশী জাতীয়তা সনদ ও জন্ম নিবন্ধন। বাংলাদেশে এসে এতসব অবৈধ কাজ তারা করতে পেরেছেন নির্বাচন অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আর মেম্বারের সহায়তায়। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। অবশেষে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) জালে এই রোহিঙ্গা নারীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে আটকা পড়তে হলো। অবৈধ উপায়ে রোহিঙ্গা নাগরিকদের জন্ম নিবন্ধন সনদ প্রদান ও ভোটার তালিকায় অর্ন্তভুক্তকরণের ঘটনায় নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কর্মকর্তা-কর্মচারী ও হাটহাজারীর সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক। ১৫ জুন মঙ্গলবার দুপুরে দুদক সমšি^ত জেলা কার্যালয়-২ এ মামলাটি দায়ের করেন দুদক সমšি^ত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-২’র উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন। মামলায় অভিযুক্ত আসামিরা হলেন ডবলমুরিং নির্বাচন অফিসের অফিস সহকারী জয়নাল আবেদীন, চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন অফিসের অফিস সহায়ক নুর আহম্মদ, হাটহাজারী উপজেলা নির্বাচন অফিসের ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মো. সাইফুদ্দিন চৌধুরী, কেরানীগঞ্জ নির্বাচন অফিসের টেকনিক্যাল এক্সপার্ট সত্য সুন্দর দে, হাটহাজারী ৩ নং মির্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নুরুল আবছার, একই ইউপির সদস্য মো. নুরুল ইসলাম, জন্মসনদ প্রস্তুতকারী মোহাম্মদ বেলাল, দালাল মো. আব্দুল ছালাম ও তার পিতা মোহাম্মদ আজিজুর রহমান, রোহিঙ্গা লাকী আক্তার এবং নাজির আহমেদ। দুদক সূত্রে জানা যায়, অসৎ উদ্দেশ্যে রোহিঙ্গা নাগরিক লাকী আক্তারকে (রমজান বিবি) ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে সরাসরি জড়িত ছিলেন নির্বাচন অফিসের অফিস সহায়ক জয়নাল আবেদীন। জয়নাল নিজ বাসায় বসে নির্বাচন কমিশনের ল্যাপটপ ব্যবহার করে ডাটা এন্ট্রি করেন। এই কাজে সহায়তা করেন হাটহাজারী উপজেলার নির্বাচন অফিসের ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মো. সাইফু উদ্দিন চৌধুরী। পরবর্তীতে রোহিঙ্গা লাকী ও তার দুই মেয়েকে পাসপোর্ট বানাতে বাংলাদেশী জাতীয়তা সনদপত্র ও জন্ম নিবন্ধন সনদ প্রদান করে হাটহাজারীর ৩ নম্বর মির্জাপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য নুরুল ইসলাম। এই কাজে সহায়তা করেন জন্মসনদ প্রস্তুতকারী মোহাম্মদ বেলাল উদ্দিন, ৩ নম্বর মির্জাপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নুরুল আবছার, দালাল মোহাম্মদ আজিজুর রহমান ও তার পিতা মো. আ. ছালাম। মামলার বাদি দুদক কর্মকর্তা মো. শরীফ উদ্দিন বলেন, অভিযুক্তরা একে অপরের যোগসাজশে অর্পিত ¶মতার অপব্যবহার করে অবৈধ উপায়ে ভুয়া পরিচয়, নাম ঠিকানা ব্যবহার করে জন্ম নিবন্ধন সনদ প্রদান ও জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি এবং স্মার্ট কার্ড প্রদান করে দণ্ডবিধি’র ৪০৯/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/১০৯ ধারা তৎসহ ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। # ১৫.০৬.২০২১/চট্টগ্রাম#