কিশোর গ্যাং লিডার সন্ত্রাসী টিনু কারাগারে
কিশোর গ্যাং লিডার যুবলীগ নামধারী সন্ত্রাসী নূর মোস্তফা টিনুকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। রোববার (২০ জুন) মহানগর দায়রা জজ-৪’র বিচারক আফরোজা জেসমিন কলির আদালত টিনুর জামিন আবেদন না মঞ্জুর তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন। নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশান) মো. সাহাবুদ্দিন জানান, গত ২৩ মে অস্ত্র মামলায় টিনুর জামিন বাতিল করে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন হাইকোর্টের আপিল বিভাগ। সেই নির্দেশে রোববার আত্মসমর্পণ করে পুনরায় জামিনের আবেদন করলে আদালত তা নাকচ করে টিনুকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন। এর আগে গত ২২ এপ্রিল রাষ্ট্রপক্ষ টিনুর জামিন বাতিল চেয়ে হাইকোর্টের আপিল বিভাগে পিটিশন দায়ের করেন। শুনানি শেষে ২৩ মে টিনুর জামিন বাতিল করে হাইকোর্টের আপিল বিভাগ। আদেশে বলা হয়, আসামি নূর মোস্তফা টিনুকে বিচারিক আদালতে দুই সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণ করতে হবে। প্রসঙ্গত ২০১৯ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামে শুদ্ধি অভিযানে র্যাবের হাতে অস্ত্রসহ আটক হয়েছিল গ্যাং লিডার নূর মোস্তফা টিনু। চকবাজার কাপাসগোলা এলাকা থেকে একটি বিদেশি পিস্তলসহ তাকে আটক করে র্যাব-৭। পরে তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী বাসায় তল্লাশি চালিয়ে একটি শর্টগান ও ৬৭ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনায় র্যাব বাদি হয়ে পাঁচলাইশ থানায় অস্ত্র আইনে নূর মোস্তফা টিনু ও তার সহযোগী জসিম উদ্দিনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত প্রথমে পুলিশ করলেও পরবর্তীতে আদালতের নির্দেশে এ তদন্ত ভার যায় র্যাবের হাতে। দীর্ঘদিন কারাগারে থাকার পর চলতি বছরের ২৩ জানুয়ারি অস্থায়ী জামিনে মুক্তি পায় টিনু। উল্লেখ্য, নূর মোস্তফা টিনুর বিরুদ্ধে নগরীর চকবাজার ও পাঁচলাইশ থানা এলাকায় বেপরোয়া কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণ ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপে জড়িত থাকার বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। নগরীর চকবাজারসহ আশপাশের এলাকার আতংক যুবলীগ নেতা পরিচয় দানকারী নূর মোস্তফা ওরফে টিনু চাঁদাবাজি, ছিনতাই, দখলবাজিসহ নানা অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও বাণিজ্য কর্মকান্ডে জড়িত। টিনুর বড় ভাই মোহাম্মদ সেলিম জামায়াতের রুকন পর্যায়ের একজন নেতা আর ছোট ভাই নুরুল আলম শিপু থানা ছাত্রদলের সভাপতি। ফলে বিএনপি কিংবা আওয়ামী লীগ যারাই ক্ষমতাই আসুক, তিনি সবসময় নিরাপদ থাকতেন। শুদ্ধি অভিযানে র্যাবের হাতে আটকের পর গ্রুপটি কিছুটা নিস্ক্রিয় হলেও পরে হাল ধরেন টিনুর ভাই চকবাজার থানা ছাত্রদল সভাপতি নুরুল আলম শিপু। তার বিরুদ্ধে ছিনতাইসহ একাধিক মামলা বিচারাধীন আছে। সম্প্রতি চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ও তার অনুসারীদের উপর বহিরাগতদের নিয়ে হামলার মামলায় টিনুকে প্রধান আসামি করে আরও একটি মামলা হয় চকবাজার থানায়। ২০১৮ সালে নগর পুলিশের তৈরি করা তালিকায় কিশোর গ্যাং গডফাদার হিসেবে টিনুর নাম রয়েছে প্রথম সারিতে। টিনুর নিজস্ব ক্যাডার বাহিনী আছে, আছে কিশোর গ্যাংও। এলাকার কোচিং সেন্টার, ক্লিনিক, প্রাইভেট হাসপাতালসহ যাবতীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মূলত তার কাছে জিম্মি বলে অভিযোগ রয়েছে। গত জানুয়ারিতে অস্থায়ী জামিনে আসার পর গ্রুপটি ফের বেপরোয়া হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ করছে স্থানীয়রা। # ২০.০৬.২০২১ চট্টগ্রাম #