চট্টগ্রাম বন্দরে আসা জাহাজের ৭ নাবিক করোনাক্রান্ত ২১ নাবিককে আইসোলেশনে – পুরো জাহাজ জীবাণুমুক্ত করার নির্দেশ
চীন থেকে চট্টগ্রাম বন্দরের বর্হিনোঙ্গরে আসা সারবাহী একটি জাহাজের সাত নাবিকের নমুনা পরীক্ষায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। ওই সাত নাবিকসহ জাহাজে থাকা মোট ২১ নাবিককে নামিয়ে আইসোলেশনে রাখার পাশাপাশি পুরো জাহাজ পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন করে জীবাণুমুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। রোববার (২২ আগস্ট) রাতে পাওয়া নমুনা পরীক্ষার ফলাফলে সাতজনের শরীরে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। তবে সাতজনের কারও হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার মতো পরিস্থিতি হয়নি বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এর আগে এমভি সেরেন জুনিপার নামে ওই জাহাজটি থেকে পণ্য খালাস বন্ধ ঘোষণা করে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, ৪৬ হাজার ৩০০ মেট্রিকটন ডিএপি সার নিয়ে জাহাজটি গত ১২ আগস্ট চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙ্গরে পৌঁছে। জাহাজটি বর্তমানে বন্দরের বহির্নোঙরের আলফা অ্যাংকরেজ এলাকায় আছে। জাহাজের শিপিং এজেন্ট বন্দর কর্তৃপক্ষকে জানান, ওই জাহাজের কয়েকজন নাবিকের মধ্যে করোনার উপসর্গ আছে। সাতজন জ্বরে ভুগছেন। এরপর বন্দরের স্বাস্থ্যকর্মীরা জাহাজে গিয়ে সব নাবিকের নমুনা সংগ্রহ করেন। রোববার (২২ আগস্ট) রাতে নমুনা পরীক্ষার ফলাফলে তাদের করোনা শনাক্ত হয়। জাহাজ থেকে পণ্য খালাস আপাতত বন্ধ থাকবে। নাবিকদের কোয়ারেনটাইন পিরিয়ড শেষ হলে পণ্য খালাসের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আর আক্রান্তদের বিষয়ে শিপিং এজেন্টকে স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশনা মেনে চলার কথা বলা হয়েছে।’ চট্টগ্রামের সহকারি স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. নুরুল আবছার বলেন, ‘নমুনা পরীক্ষার পর আমরা আবারও জাহাজে গিয়ে তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছি। তারা মোটামুটি সুস্থ আছে। শিপিং এজেন্টকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, সাতজনকে যেন জাহাজ থেকে নামিয়ে সরকার নির্ধারিত কোনো আইসোলেশন সেন্টারে ভর্তি করা হয়। এর মধ্যে কেউ যদি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে তাকে যেন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। জাহাজের বাকি ১৪ জন নাবিককেও নামিয়ে ফেলার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তারাও শিপিং এজেন্টের তত্ত্বাবধানে কোয়ারেনটাইনে থাকবেন।’ তিনি বলেন, ‘পুরো জাহাজ স্যানিটাইজ হওয়ার পর এবং কোয়ারেনটাইনের সময় শেষ হওয়ার পর ১৪ জন আবার জাহাজে উঠবেন। বাকি সাতজন করোনামুক্ত হলেও আর জাহাজে উঠতে পারবেন না। তাদের বিমানের মাধ্যমে বাংলাদেশ ত্যাগ করতে হবে।’ নুরুল আবছার আরও জানান, জাহজটি চীনের বন্দর থেকে এলেও সেটি চীনের পতাকাবাহী নয়। জাহাজের নাবিকরাও কেউ চীনের নাগরিক নন। সেখানে ইউক্রেনসহ বিভিন্ন দেশের নাবিক আছেন। বন্দর সূত্রে জানা গেছে, ১৯০ মিটার লম্বা, ১১ দশমিক ১ মিটার ড্রাফটের (জাহাজের পানির নিচের অংশ) জাহাজটি বাহামার পতাকাবাহী। জাহাজটিতে ২১ জন নাবিক রয়েছেন। এর মধ্যে ১৬ জন ফিলিপাইনের, ৩ জন ইউক্রেনের, ১ জন রাশিয়ার ও ১ জন রোমানিয়ার। সর্বশেষ সিঙ্গাপুর বন্দর হয়ে ক্যাপ্টেন শিপিং এজেন্টের মাধ্যমে চট্টগ্রামে আসে জাহাজটি।
# ২৩.০৮.২০২১ চট্টগ্রাম #