চলমান সংবাদ

চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় ড্রেজিংয়ের পাইপ লাইন নিয়ে সংঘর্ষ, কৃষকসহ গুলিবিদ্ধ ৭

জামায়াত নেতার ছেলের নেতৃত্বে হামলার অভিযোগ চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় নদী ড্রেজিংয়ের বালু তোলার পাইপ নেওয়াকে কেন্দ্র করে কৃষকদের উপর গুলি চালিয়েছে সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় ৭জন কৃষক গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ১৫ আহত হয়েছেন। জামায়াতের সাবেক নেতা মুমিনুল হক চৌধুরীর ছেলে রুহুল্লা চৌধুরীর নেতৃত্বে এই হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। বৃহস্পতিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় উপজেলার চরতী ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের তুলাতলি শঙ্খ নদীর পাড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহতরা বর্তমানে চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। ঘটনার খবর পেয়ে সাতকানিয়া থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে উঠে। গুলিবিদ্ধসহ আহতরা হলেন আবদুল মালেক (৫০), মো. কায়সার (২৮), মো. রুবেল (২১), আবু তাহের (৩৬), ফয়েজ আহমদ(৬০), নুরুল হাসান (৫০), হাফেজ আহমদ (৫৫), মো. মানিক(২৫), ইয়াকুব হোসেন (৫৫), শাহেদুল ইসলাম (২০), মো. রিপন(১৮), জিয়াউর রহমান (২১), রুহুল আমিন (৫৫), মো,ইব্রাহীম, মো. ফারুকসহ আরো অজ্ঞাত ৩ জন। এদের মধ্যে নুরুল হাসান ও আবদুল মালেক এর শারীরিক অবস্থা আশংকাজনক বলে জানা যায়। স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সুত্রে জানা যায়, চরতী ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের তুলাতুলি নামক স্থানের শঙ্খ নদী হতে দীর্ঘদিন যাবৎ নদী ড্রেজিং করে বালু উত্তোলন করে আসছে এসএস ড্রেজার নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। ড্রেজিংয়ের বালু স্তুপ করে রাখা ও কৃষকের চাষাবাদের জায়গার উপর দিয়ে বালু তোলার পাইপ চালানোর কারণে এলাকার কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা বিভিন্ন সময় তাদের ফসলি জমির উপর দিয়ে পাইপ না চালানোর জন্য বাঁধা দেয়। কৃষকরা প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে লিখিত অভিযোগ দিলে ইউএনও আপাতত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে বালু না তুলতে মৌখিকভাবে নিষেধ করেন। বৃহস্পতিবার সকালে বালু উত্তোলনের জন্য কৃষকের জমির উপর দিয়ে পাইপ চালানোর প্রস্তুতি নিলে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজনকে কৃষকরা বাঁধা দেয়। এসময় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ হয়ে জামায়াত নেতার ছেলে রুহুল্লা চৌধুরীর নেতৃত্বে ১০-১৫ জনের একটি সন্ত্রাসী দল কৃষক ও স্থানীয়দের উপর গুলি ছুঁড়ে। এতে ৭ জন গুলিবিদ্ধসহ ১৫ জন আহত হয়। গুলিবর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত রুহুল্লাহ চৌধুরীর সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এই ঘটনায় আমার সংশ্লিষ্টতা নেই। সরকারি কাজে বাধা দিতে এলাকার কয়েকজন লাঠি-সোটা নিয়ে এসেছিল। পরে নিজেদের গুলিতে নিজেরা আহত হয়েছেন। আসন্ন ইউপি নির্বাচনকে সামনে রেখে আমার বিরুদ্ধে অপ্রপচার চালানো হচ্ছে। গোলাগুলির ঘটনা স্বীকার করলেও বালু তোলাকে কেন্দ্র করে এই ঘটনা ঘটেনি দাবি করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এসএস ড্রেজারের দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যানেজার মেহেদী হাসান বলেন, ড্রেজিংয়ের বালু রাখার স্থান পেতে স্থানীয়ভাবে আমরা রুহুল্লাহর কাছে সহযোগিতা চেয়েছি। পাইপ চালানোর প্রস্তুতি সময় সকালে গুলাগুলির ঘটনা ঘটে। এটি সামনে ইউপি নির্বাচন ও এলাকার আধিপত্য বিস্তারের জেরে হয়েছি। গুলাগুলির ঘটনাটি বালু তোলাকে কেন্দ্র করে হয়নি। সাতকানিয়া থানার ওসি মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, নদী ড্রেজিংয়ের বালু তোলার স্থানে সকালে উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি (এসিল্যান্ড) যাওয়ার কথা ছিল। সকালে ড্রেজিংয়ের কাজ পাওয়া ঠিকাদারদের লোকজন ফসলি জমির উপর দিয়ে বালু তোলার পাইপ চালানোর চেষ্টা করলে এলাকার কিছু কৃষক উক্তকাজে বাধা দেয়। এ ঘটনায় মারামারিতে ও গুলিতে গুলিবিদ্ধসহ ৮-১০ লোক আহত হয়েছেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত পুলিশ গেলে এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যায়। এ ব্যাপারে কেউ অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
# ৩০.০৯.২০২১ চট্টগ্রাম #