দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ‘এমভি হাইয়ান সিটি’ ৬৫ দিন পর মেরামত শেষে বন্দর ছাড়লো
চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে আরেকটি জাহাজের সঙ্গে সংঘর্ষে ক্ষতিগ্রস্ত হয় সিঙ্গাপুরগামী জাহাজ ‘এমভি হাইয়ান সিটি’। ১৭২ মিটার লম্বা ১১৫৬টি রফতানির কনটেইনার বোঝাই জাহাজটি মেরামত শেষে দীর্ঘ ৬৫ দিন পর সিঙ্গাপুরের উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম ছেড়ে গেছে। মঙ্গলবার (২১ জুন) দুপুরে জাহাজটি রপ্তানি পণ্য নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর ত্যাগ করে। চট্টগ্রাম বন্দর সূত্র জানায়, ২০০ কোটি টাকা দামের হাইয়ান সিটি জাহাজটিতে রফতানি কনটেইনারগুলোর মূল্য প্রায় ৮০০ কোটি টাকা। জাহাজটি উদ্ধার, মেরামত করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। বন্দরের সাহসী ও সঠিক সিদ্ধান্তের কারণে ৮০০ কোটি টাকার রফতানি পণ্য রক্ষা পেয়েছে। পাশপাশি জাহাজটি ডুবে গেলে বড় আর্থিক লোকসান ছাড়াও মেরিটাইম ওয়ার্ল্ডে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হতো। দক্ষতা ও সফলতার সাথে জাহাজটি মেরামত করে গন্তব্যে রওয়ানা করিয়ে দেয়ায় বন্দরের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে পাশপাশি স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন তৈরি পোশাক রফতানিকারকরা। প্রসঙ্গত গত ১৪ এপ্রিল পণ্যবাহী জাহাজ ‘এমভি হাইয়ান সিটি’ বন্দর ত্যাগ করার পর কুতুবদিয়ার চ্যানেলের কাছে তেলবাহী জাহাজ ‘এমটি ওরিয়ন এক্সপ্রেস’র সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছিল। দুর্ঘটনার পরপরই জাহাজ ‘এমভি হাইয়ান সিটি’র পোর্ট সাইডে কার্গো হোল্ডে ছিদ্র হয়ে পানি ঢুকে ৭ ডিগ্রি কাত হয়ে যায়। পানি ঢোকায় ড্রাফট বেড়ে ১০ দশমিক ৭ মিটারে দাঁড়ায়। জাহাজটি ডুবে যাওয়ার উপক্রম হয়। বিশেষ উদ্যোগে জাহাজটি কুতুবদিয়া এলাকায় নোঙর করা হয়। এরপর জাহাজটি বন্দরের টাগ কান্ডারী ১, ৬, ১০, ১১, লুসাই, জরিপ-১১, বর্ষণ, প্রান্তিক সরোয়ার, মুরিং বোট’র সহযোগিতায় বার্থিং করানো হয় বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি সংলগ্ন কর্ণফুলী ড্রাইডক জেটিতে। সেখানে মেরামত সম্পন্ন হয়। চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, দুর্ঘটনার পরপরই শক্তিশালী টাগবোট দিয়ে জাহাজটি বার্থিং করা হয়েছিল। ফলে জাহাজে থাকা পণ্যগুলো নষ্ট হয়নি। জাহাজটি মেরামত শেষে মঙ্গলবার দুপুরে ১১শ’ ৫৭ টিইইউএস কনটেইনার নিয়ে সিঙ্গাপুরের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছে। পণ্য ও জাহাজ দুটিই সফলভাবে রক্ষা করা গেছে, এটাও বন্দরের সক্ষমতা ও সফলতার প্রমাণ। এ কাজে সরকারি, বেসরকারি অনেক সংস্থা, প্রতিষ্ঠান আমাদের সহযোগিতা করেছে। তিনি বলেন, বন্দরের শক্তিশালী টাগবোট কান্ডারি ১ এবং কান্ডারি ৬’র সহায়তায় জাহাজটি কর্ণফুলী নদীর বন্দর চ্যানেল অতিক্রম করে। এ সময় নিয়ম অনুযায়ী জাহাজটির নেতৃত্বে ছিলেন চট্টগ্রাম বন্দরের অভিজ্ঞ পাইলট আবু সাইদ মো. কামরুল আলম। তিনি বহির্নোঙরে পৌঁছে জাহাজের নিজস্ব পাইলটের কাছে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেন।
# ২১.০৬.২০২২ চট্টগ্রাম #