চলমান সংবাদ

মন্ত্রিসভার বৈঠক

-শ্রমিকের মাতৃত্বকালীন ছুটি ১২০ দিন, নেওয়া যাবে ইচ্ছা অনুযায়ী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। ঢাকা, ৯ অক্টোবর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।

নারী শ্রমিকদের মাতৃত্বকালীন ছুটি ৮ দিন বাড়িয়ে ১২০ দিন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আর এই ছুটি নারী শ্রমিক তাঁর ইচ্ছা অনুযায়ী প্রসবের আগে বা পরে  সুবিধামতো সময়ে নিতে পারবেন। এমন বিধান রেখে বাংলাদেশ শ্রম (সংশোধন) আইন–২০২৩-এর খসড়া অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আজ সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে আইনের খসড়াটি অনুমোদন দেওয়া হয়। পরে বিকেলে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বর্তমানে নারী শ্রমিকদের মাতৃত্বকালীন ছুটি ১৬ সপ্তাহ (১১২ দিন)। এই ছুটি প্রসবের আগে আট সপ্তাহ ও পরে আট সপ্তাহ নেওয়ার বিষয়ে ভাগ করা ছিল। এটিকে এখন সব মিলিয়ে ১২০ দিন করা হয়েছে। এটি প্রসূতি তাঁর সুবিধামতো সময়ে নিতে পারবেন।

বাংলাদেশ শ্রম (সংশোধন) আইন–২০২৩–এর খসড়া অনুযায়ী, মাতৃত্বকালীন ছুটি ছাড়াও ট্রেড ইউনিয়ন করাসহ আরও কিছু ক্ষেত্রে নমনীয়তা আনা হয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আগে ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের জন্য একটি প্রতিষ্ঠানের কমপক্ষে ২০ শতাংশ শ্রমিকের স্বাক্ষরযুক্ত বা তাঁদের সমর্থনসহ আবেদন না করলে ট্রেড ইউনিয়ন করা যেত না। সেটিকে এখন ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। এখন শ্রমিকের সংখ্যা যদি ৩ হাজারের কম হয়, তাহলে ২০ শতাংশের সমর্থন লাগবে। আর তিন হাজারের বেশি হলে সেটি ১৫ শতাংশ শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করলে এবং আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নিলে সেখানে তাঁরা করতে পারবেন। এ ছাড়া গ্রুপ অব কোম্পানি হলে ২০ শতাংশ শ্রমিক চাইলে ট্রেড ইউনিয়ন করা যাবে। বর্তমান আইনে ৩০ শতাংশ শ্রমিক চাইলে তা করা যায়।

মাহবুব হোসেন বলেন, শ্রমিকের কল্যাণ নিশ্চিত করার জন্য আইনটি তাঁদের জন্য আরও সহজ করা হয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, প্রস্তাবিত আইনে নতুন একটি ধারা সংযোজন করা হয়েছে। বর্তমানে যদি কোনো শ্রমিক সংক্ষুব্ধ হন, তাহলে তিনি শ্রম আদালতে মামলা করতে পারেন। দেশে ১৩টি শ্রম আদালত আছে, যেখানে জেলা জজ পর্যায়ের বিচারকেরা আছেন। সেই শ্রম আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা যায়। আপিল করার জন্য শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল আছে, যেখানে হাইকোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। যেহেতু হাইকোর্টের বিচারপতির নেতৃত্বে এই ট্রাইব্যুনাল, তাই এই ট্রাইব্যুনালের রায় হাইকোর্টের রায়ের সমপর্যায়ের হবে। তাই কেউ আপিল করলে আপিল বিভাগে করতে হবে।

এর মানে হলো, ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট করা যাবে না, সরাসরি আপিল বিভাগে আপিল করা যাবে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, শ্রমিকদের ক্ষেত্রে কোনো বৈষম্য করা যাবে না। কোনো প্রতিষ্ঠানে শ্রমিক নিয়োগের ক্ষেত্রে জাতি, লিঙ্গ, ধর্ম, বর্ণ, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন; অর্থাৎ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিনির্বিশেষে কোনো বৈষম্য সৃষ্টি করা যাবে না।

# ০৯/১০/২০২৩, ঢাকা