পুলিশকে কোনো পক্ষের নয় জনগণের সেবক হতে হবে
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বীর প্রতীক বলেছেন, তিন দিকে শিকলে ঘেরা একদিকে বঙ্গোপসাগরের মধ্যেই আমাদের এই বাংলাদেশ। এ দেশে ৫ আগস্ট ছাত্র জনতার বৈষম্য বিরোধী কোটা সংস্কার আন্দোলনের মাধ্যমে অর্জিত দ্বিতীয় স্বাধীনতার সুফল ভোগ করতে হলে সবক্ষেত্রে পরিবর্তন অপরিহার্য। তিনি পুলিশ বাহিনীকে তাদের চরিত্র পরিবর্তন করে কোনো পক্ষের নয়, জনগণের প্রকৃত সেবক ও মানবিক পুলিশ হওয়ার আহ্বান জানান।
তিনি পটিয়া আল জামিয়া আল ইসলামিয়া জমিরিয়া কাসেমুল উলুম মাদ্রাসায় ছাত্র আন্দোলনে আহত ছাত্রদের চিকিৎসার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দিয়ে বলেন, ছাত্র জনতার যৌক্তিক আন্দোলন কখনো বিফলে যায় না। তার প্রমাণ ৫ আগস্টের বিজয়। তিনি এ বিজয় ধরে রাখতে অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতা করার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। গতকাল রবিবার দুপুরে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তর কওমী মাদ্রাসা পটিয়া আল জামিয়া আল ইসলামীয়ার আহত ছাত্রদের শয্যাপাশে এসে তাদের খোঁজ খবর নিয়ে তাৎক্ষনিক প্রদত্ত এক বিফিংয়ে তিনি উপরোক্ত কথা গুলো বলেন।
এদিকে আমাদের লোহাগাড়া প্রতিনিধি জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক–ই–আজম বীর প্রতীক বলেছেন, আজ ইসমামুল হকদের আত্মত্যাগের ফলে স্বৈরশাসক পতন হয়ে আমরা নতুন স্বাধীনতা পেয়েছি। তাদের এই আত্মত্যাগ দেশের মানুষ কোনোদিন ভুলে যাবে না। দেশ ও জাতি এই শহীদ সন্তানদের স্মরণ রাখবে। শহীদ ইসমামের পরিবারের সকল দায়–দায়িত্ব সরকার নেবে। গতকাল রোববার দুপুরে লোহাগাড়া উপজেলার আমিরাবাদ দর্জিপাড়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত ইসমামুল হকের কবর জেয়ারত শেষে শোকাহত পরিবারকে সান্তনা দিতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
পরে গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর দুর্বৃত্তের দেয়া আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত থানা ও উপজেলা পরিষদ ভবন পরিদর্শনে যান উপদেষ্টা ফারুক–ই–আজম। পরিদর্শনকালে তিনি বলেন, পুলিশের প্রতি দেশের জনগণের নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়েছে। এই দোষ পুলিশের নয়, স্বৈরশাসক নিজেদের স্বার্থে পুলিশকে জনগণের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে এই ধারণা তৈরি করেছে। পুলিশ জনগণের শত্রু নয়। দেশের মালিক জনগণ। জনগণকে প্রাপ্য সম্মানটুকু দিন। জনগণ আপনাদের ভালোবাসবে।
তিনি আরো বলেন, বিগত স্বৈরশাসক পুলিশকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছে। এখন অনেক জায়গায় জনগণ পুলিশকে ফুল দিয়ে বরণ করে নিচ্ছে। এই ধারা অব্যাহত থাকুক। সবাইকে নিয়ে আমরা একটি বৈষম্যহীন সুন্দর বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই।
এ সময় সাথে ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক মো. সাদি উর রহিম জাদিদ, লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ ইনামুল হাসান, সাতকানিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শিবলী নোমান, লোহাগাড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাজমুন লায়েল, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রামের সমন্বয়ক তালাত মাহমুদ রাফি প্রমুখ।