চলমান সংবাদ

জাহাজভাঙা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়ন ও সামাজিক ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় শোভন কাজ বাস্তবায়নের দাবি

জাহাজভাঙা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়ন ও সামাজিক ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় শোভন কাজ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আজ চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে জাহাজভাঙা শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন ফোরামের উদ্যোগে এক মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি ও ফোরামের আহ্বায়ক তপন দত্তের সভাপতিত্বে এবং জাহাজভাঙা শ্রমিকদের পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা বিষয়ক তথ্য কেন্দ্রের সমন্বয়ক ফজলুল কবির মিন্টুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এই কর্মসূচিতে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের পক্ষে বক্তব্য প্রদান করেন, জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি ও ফোরামের যুগ্ম আহ্বায়ক এ এম নাজিম উদ্দিন, জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শ ম জামাল উদ্দিন, জাহাজভাঙা শ্রমিক সেফটি কমিটির আহ্বায়ক এডভোকেট জহির উদ্দিন মাহমুদ, জাহাজভাঙা শ্রমিক সেফটি কমিটির সদস্যসচিব ও বাংলাদেশ মেটাল ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের যুগ্ম সম্পাদক মোহাম্মদ আলী, জাহাজভাঙা শ্রমিক সেফটি কমিটির যুগ্ম সদস্যসচিব মোঃ ইদ্রিছ, জাহাজভাঙা শ্রমিক সেফটি কমিটির সদস্য মাহাবুব চৌধুরি, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সংগঠক মোঃ জামাল উদ্দিন প্রমুখ
বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)’র  আহ্বানে প্রতি বছর ৭ই অক্টোবর শোভন কর্ম দিবস পালিত হয়। এ বছর, শ্রমিকদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ জীবন যাপন নিশ্চিত করার গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করা হয়। সমাবেশে বক্তারা সীতাকুণ্ডস্ত বার আউলিয়ায় জাহাজভাঙা শিল্পে শ্রমিকদের বর্তমান জীবনযাত্রা, পেশাগত স্বাস্থ্য ঝুঁকি ও নিরাপত্তার চিত্র তুলে ধরেন।
সভায় বক্তারা উল্লেখ করেন, সম্প্রতি একটি জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে জানা যায়, ৭ সেপ্টেম্বর এস এন কর্পোরেশনের একটি দুর্ঘটনায় আহত ৭ জন শ্রমিকের রক্তে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর ১৪টি ভারী ধাতুর উপস্থিতি পাওয়া গেছে, যা শ্রমিকদের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত উদ্বেগজনক। বক্তারা জানান, প্রতি বছর গড়ে জাহাজভাঙা শিল্পে কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় ১৫-১৬ জন শ্রমিক প্রাাণ হারাচ্ছেন এবং আহত শ্রমিকের সংখ্যাও প্রচুর। আহতরা চিকিতসা ও শ্রমআইন অনুযায়ী চিকিতসাকালীন সবেতন ছুটি-ক্ষতিপূরন কিছুই পায় না।
সমাবেশে বিভিন্ন বক্তা শোভন কাজ বাস্তবায়নের জন্য নিম্নলিখিত দাবি সমূহ তুলে ধরেন:

১) অবিলম্বে জাহাজভাঙা শ্রমিকদের জন্য জীবনধারন উপযোগি নিম্নতম মজুরি ঘোষণা করতে হবে।
২) সকল শীপ ব্রেকিং ইয়ার্ডে শ্রমিকদের নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র ও সার্ভিস বুক প্রদান করতে হবে।
৩) শ্রমিকদের সকল প্রকার সবেতন ছুটি প্রদান করতে হবে।
৪) আইএলও কনভেনশন ৮৭ ও ৯৮ অনুসারে অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
৫) শ্রমিকদের জন্য স্থায়ীভাবে ন্যায্য মূল্যে রেশনিং ব্যবস্থা চালু করতে হবে।
৬) শ্রমিকদের জন্য প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট গঠন করে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শ্রমিকদের ডাটাবেজ তৈরি করতে হবে।
৭) দক্ষ ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শ্রমিক ছাড়া অন্য কোন অদক্ষ বা অনভিজ্ঞ শ্রমিক দ্বারা জাহাজভাঙা কার্যক্রম পরিচালনা করা যাবে না।
বক্তারা একযোগে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান, যেন শ্রমিকদের অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করে শ্রমজীবী মানুষের উন্নত ও মর্যাদাপূর্ণ জীবন এবং সামাজিক ন্যায় বিচার নিশ্চিত করা হয়।