শীর্ষ খবর:
মতামত

নারী কর্মীকে নির্যাতন: একটি সুপার শপের অন্ধকার দিক

ফজলুল কবির মিন্টু
সংগঠক, টিইউসি, কেন্দ্রীয় কমিটি
বাংলাদেশের একটি সুপার শপের হিসাবরক্ষক, যে একজন নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান, পারিবারিক অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলার জন্য কাজ করছেন। তবে, তাঁর দুই বছরের চাকরি জীবনে অসহনীয় পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছেন। গত ২২ অক্টোবর থেকে কর্তৃপক্ষকে অবহিত না করেই কাজ করা বন্ধ করার পর, তাঁর বিরুদ্ধে মনগড়া অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে প্রথম কারণ দর্শানো নোটিশের জবাব দেওয়ার পরও তাঁর জবাব উপেক্ষা করা হয়েছে। এরপর দ্বিতীয়বার নোটিশ দেওয়ায় তিনি আরও আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। অভিযোগ উঠেছে, তাঁর সহকর্মী একজন অ্যাকাউন্টস ম্যানেজার মোবাইলে জানান, কাজ শুরু করলে সব অভিযোগ তুলে নেওয়া হবে।
দীর্ঘ দুই বছর চাকরি জীবনে, নারী হিসাবরক্ষকটি যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন এবং অকথ্য ভাষার গালিগালাজের সম্মুখীন হয়েছেন। যেহেতু তিনি একজন নারী, তাই প্রকাশ্যে বিষয়টি আনতে চান নি। তবে, দুইটি নোটিশের প্রেক্ষিতে তিনি বাধ্য হয়েছেন এই বিষয়গুলো উত্থাপন করতে। তিনি জানিয়েছেন, প্রয়োজনে যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত রয়েছেন।
এছাড়া, প্রতিষ্ঠানটি কর্মচারীদের ছুটি ও অন্যান্য সুবিধা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করছে না। মাত্র একদিন অনুপস্থিতির জন্য নোটিশ দেওয়া হলেও, শ্রম আইন অনুযায়ী ছুটির প্রয়োজনীয়তার প্রতি মনোযোগ দেওয়া হচ্ছে না।
শ্রম বিধিমালা ৩৬১(ক) অনুযায়ী তিনি অভ্যন্তরীণ যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটির মাধ্যমে অভিযোগ তদন্তের আবেদন করেছেন। তিনি আশাবাদী যে, এই তদন্তের মাধ্যমে তাঁর বিরুদ্ধে আনা সব ষড়যন্ত্রমূলক অভিযোগ প্রত্যাহার করা হবে এবং সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত হবে।
এই পরিস্থিতি একটি সুপার শপের পরিবেশের অন্ধকার দিককে প্রকাশ করে, যেখানে একজন নারী কর্মীর মর্যাদা ও নিরাপত্তা বিপন্ন। সমাজে নারীর কাজের ক্ষেত্র ও পেশাগত অধিকার সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা এখন সময়ের দাবি।
লেখকঃ সংগঠক, টিইউসি, কেন্দ্রীয় কমিটি