বিজ্ঞান ভাবনা বিজন সাহা (১৭৩) এলোমেলো স্বপ্ন
দেশ থেকে বিভিন্ন রকমের খবর আসছে। এই শ্রমিকের মিছিলে গুলী তো এই সংখ্যালঘুদের মিছিল। আইন আছে নাকি উপদেষ্টাদের মুখের কথাই আইন সেটাই এখন পর্যন্ত জাতি বুঝে উঠতে পারছে না। যারা উৎসাহ নিয়ে আন্দোলনের আগুনে ঘি ঢেলেছিল তাদের বেশির ভাগ এখন অনুতপ্ত না হলেও শঙ্কিত। আবার অনেকেই এখনও বিশ্বাস করে বসে আছে যে এটা আওয়ামী শাসনের প্রতিক্রিয়া – অচিরেই সব দূর হবে। এরা আসলে কারা – নিষ্পাপ শিশু নাকি বিভিন্ন প্রগতিশীল দলের মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি – ঠিক যেমন আওয়ামী লীগ আর ছাত্রও লীগের মধ্যে জামাত শিবিরের লোকজন? কথায় আছে প্রভাতই দিনের আগাম বার্তা জানায়। এমনকি যদি অনেকের মত আমরা মনে করি এসব বাড়াবাড়ি আওয়ামী শাসনের বিরুদ্ধে অতি প্রতিক্রিয়া – সময় মত সেটার লাগাম টেনে না ধরতে পারলে তা একদিন আওয়ামী দুঃশাসনকে ছাড়িয়ে যাবে। অন্তত আমাদের ইতিহাস সেটাই বলে। মুখে গণতন্ত্র, মানবাধিকার এসব বললেও এ দেশের অধিকাংশ মানুষ চায় নিজেকে একটু বেশি সমান মনে করতে, সব কিছুতেই অন্যদের চেয়ে একটু বেশি পেতে। যার ফলে দুর্নীতি বলি, দুঃশাসন বলি, ক্ষমতার অপব্যবহার বলি সবই জ্যামিতিক হারে বাড়তেই দেখি। আজ পর্যন্ত বিরোধী অবস্থায় কালা কানুন বলে চিৎকার করার পরেও ক্ষমতায় এসে কেউই সেই কালা কানুন বিলোপ করেনি, বরং চার গুন উৎসাহে বিরোধীদের উপর সেটা প্রয়োগ করেছে। কেউই দুর্নীতি দমন করেনি, বরং আরও বেশি করে দুর্নীতি করেছে। অবস্থা এমন – সবাই একদিকে মনে করে তাদের ক্ষমতা চিরস্থায়ী, অন্য দিকে যত দ্রুত সম্ভব দেশের সম্পদ লুটপাট করে এই ভেবে যে যেকোনো সময় পালাতে হতে পারে তাই যত দ্রুত যত বেশি নেয়া যায় ততই ভালো। এটা অনেকটা কোথাও ডাকাত পড়ার মত আর পুলিশ আসার আগেই যত বেশি সম্ভব মালামাল নিয়ে ভেগে পড়া। গণতন্ত্রের কথা বলে ক্ষমতায় এলেও এখন চেষ্টা চলছে যেকোনো ভাবে আওয়ামী লীগকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেবার। মাঝে সিপিবিকে নিষিদ্ধ করার কথাও শোনা গিয়েছিল। আসলে আমাদের দেশ থেকে রাজনীতি অনেক আগেই পালিয়েছে। হাসিনা আমলে ইস্যু থেকে ইস্যু – এভাবেই সব চলত। এখনও কোন পরিবর্তন হয়নি, শুধু ইস্যুগুলো দ্রুত পাল্টাচ্ছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয় এসব ইচ্ছে করেই করা হচ্ছে মানুষের পালস বোঝার জন্য। এক সমন্বয়ক ঘোষণা দিয়েছে আগে ছাত্র সংসদ নির্বাচন, তারপর জাতীয় সংসদ। ছাত্ররা নিঃসন্দেহে এ দেশের রাজনীতিতে সব সময়ই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। ১৯৫২, ১৯৬২, ১৯৬৯, ১৯৭১ এমনকি ১৯৯০ সব সময়ই ছাত্ররা অগ্রণী ভুনিকা পালন করেছে। এবার মানে ২০২৪ এ ব্যতিক্রম নয়। কিন্তু সমস্যা হল – আগে যদি ছাত্ররা রাজনৈতিক ভাবে ম্যাচিউর ছিল, দীর্ঘ দিন ছাত্র রাজনীতি অনুপস্থিত থাকায় এবারের ছাত্রদের মধ্যে সেই ম্যাচুরিটি দেখা যায়নি। ফলে আন্দোলন এক সময় হাইজ্যাক হয়ে গেছে। এখন সব ব্যাপারটাই কিছু সমন্বয়কের হেঁয়ালি। ছাত্র রাজনীতির বিষয়ে আমরা অনেকেই অনেক সময় বলেছি। বাংলাদেশের রাজনীতিতে বর্তমান অকালের মূল নিহিত ছাত্র রাজনীতিকে ধ্বংস করে দেয়া, ছাত্রদের রাজনৈতিক দলের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা। আমাদের রাজনীতির আরেকটা সমস্যা হচ্ছে নেতাদের নিজেদের সর্ব ক্ষেত্রে পারদর্শী মনে করা। আমাদের দেশে একজন নৌকার মাঝিও আর যাই হোক এই কান্ড জ্ঞানটুকু রাখে যে সে প্লেন চালাতে পারবে না, তাই প্রস্তাব দেবার সময় নিজের অপারগতা প্রকাশ করে। একজন পাইলট নৌকা চালাতে পারবে না একথা স্বীকার করা মানহানির সমতুল্য মনে করে তাই নৌকা ও নিজে না ডোবা পর্যন্ত চালিয়েই যায়। একেই বলে বুদ্ধির দুর্দশা। এটা আমাদের দেশের প্রায় সমস্ত বুদ্ধিজীবি ও রাজনৈতিক নেতাদের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। অন্য দিকে আরেক জন সমন্বয়ক ঘোষণা করেছে যে সেন্ট মার্টিন নিয়ে জনগণকে জানাতে সরকার বাধ্য নয়। তাহলে কার কাছে তারা দায়বদ্ধ? আসলে একদিকে তারা জনসমর্থন চাইছে, অন্য দিকে জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষা ধর্তব্যের বাইরে রেখে তারা নিজেদের খেয়াল খুশিমত কাজ করে যাচ্ছে। অনেকেই বলছে মাত্র তো কয়েক দিন গেল, পনের বছর কিছু বললেন না, এখন দু দিনেই অস্থির? তাদের বলব, পনেরো বছরের জমানো ক্রোধই হাসিনা সরকারের পতন ঘটিয়েছে। তাই পনের বছর চুপ করে থাকা মানে চুপ থাকা নয়, রাগে ক্রোধে জ্বলা আর এই দীর্ঘ মৌনতার ফলশ্রুতি আগস্টের সরকার পতন। এই আন্দোলনে জনগণের অংশগ্রহণ ছিল, তাদের আশা আকাঙ্ক্ষা ছিল। তারা এই আন্দোলনের পেছনে কোন সুক্ষ পরিকল্পনা দেখেনি, স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন মনে করেই তাতে যোগ দিয়েছে, আন্দোলনকে সফল করেছে। এখন এদের পাত্তা না দেয়া, আন্দোলনকে সুক্ষ পরিকল্পনার ফসল হিসেবে বর্ণনা করা আসলে এই মানুষের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করা। এটা কি তারা বোঝেন? বোঝেন নিশ্চয়ই তবে তোয়াক্কা করেন না। আজকাল মোশতাক, মীরজাফর হওয়া মানে পশ্চিমাদের সাথে এক টেবিলে বসার আমন্ত্রণ পত্র পাওয়া। ওরা যা বলে সেটাই ঠিক। অশিক্ষিত, অর্ধ শিক্ষিত জনতার কথায় কান দিলে কি আর উঁচু মহলে স্থান পাওয়া যায়? আরও একটা বিষয় যা খুব চোখে পড়ে তা হল সব সময়ই চেষ্টা করা হয় এক দল মানুষকে বাইরে রাখতে অর্থাৎ কেউই চায় না বাংলাদেশের সমস্ত মানুষের নেতা হতে। আওয়ামী লীগ – বিএনপি, সংখ্যালঘু – সংখ্যাগুরু, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে – বিপক্ষে বিভিন্ন তকমা দিয়ে সব সময় একদল লোক ক্ষমতার আশেপাশে থাকে আরেক দল লোক সব সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়। ফলে সব সরকার ইচ্ছে করেই শত্রু তৈরি করে। এটা অনেকটা আমেরিকার পররাষ্ট্র নীতির মত। সোভিয়েত ইউনিয়ন না থাকলে চীন, ইরান, রাশিয়া কাউকে না কাউকে শত্রু পক্ষ হিসেবে তৈরি করতে হবে। অনেকটা ঈশ্বরের অস্তিত্ব প্রমাণের জন্য শয়তান সৃষ্টি করা। যদি ভক্তির ভরে ঈশ্বর বিশ্বাস না করিস তো ভয় থেকে করবি। আচ্ছা হাজার হাজার মানুষ যখন কোন দল করে তারা সবাই কি খারাপ? কয়জন লোক অপরাধ করে? বাংলাদেশে কি অপরাধী নেই? তাই বলে কি দেশের ১৮ কোটি নাগরিকের সবাই অপরাধী? আজ নেতৃত্বের ভুলের জন্য আওয়ামী লীগের সবাইকে সাজা দেবার চেষ্টা কি দেশের মধ্যে বিভাজন তৈরি করে না? যেকোনো অজুহাতে বিভাজন তৈরি করে রাজনীতি করা আর যাই হোক দেশের জন্য মঙ্গল বয়ে আনে না। ব্রিটিশদের এই দাওয়াই আমরা আর কত প্রজন্ম ধরে খাব? তাছাড়া সমন্বয়কদের এসব রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নেবার অধিকার কে দিয়েছে? আসলে আমার ধারণা দেশের সব দলই মনে করে জনগণ তাদের ভোট দিয়ে বা রাস্তায় নেমে ক্ষমতায় এনে তাদের রাজা করেছে। তাদের আর কারো কাছে দায়বদ্ধ না হলেও চলে। অন্তত বর্তমান প্রাশাসন যেভাবে কাজ করছে তাতে গণতন্ত্রের ছিটেফোঁটা পর্যন্ত নেই। তাদের আচরণ অনেকটা গরীবের লটারি পাওয়ার মত। খুব বেশি ক্ষতি হবার আগেই সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোর উচিৎ ঐক্যবদ্ধ ভাবে এর মোকাবেলা করা, দেশকে সুস্থ রাজনৈতিক ধারায় ফিরিয়ে আনা। সমস্যা হল মুখে যাই বলি না কেন আমরা কেউ গণতন্ত্র চাই না, চাই ক্ষমতা। আর একবার ক্ষমতা পেলে আগের চেয়েও বড় স্বৈরাচারী হতে। জনগণের সেবা নয়, নিজের আত্মতুষ্টি ও প্রতিপক্ষের কাছে নিজেকে আরও বলশালী দেখানোই আমাদের একমাত্র না হলেও প্রধান উদ্দেশ্য। সমাজ থেকে এই ধারণা দূর করতে না পারলে হাজার বিপ্লবেও মানুষের মুক্তি আসবে না। আরও একটা কথা মনে রাখা দরকার প্রায় সব সরকারই কিছু না কিছু ভালো কাজও করে। হাসিনার শাসন শুধু স্বৈরাচার নয় দেশের জন্য অনেক কিছুই হয়েছে এই সময়ে। সেটা যেকোনো শাসকের ক্ষেত্রেই বলা যায়। তাই স্বৈরাচার স্বৈরাচার বলে আমরা যেন সেই সময়ের সব অর্জনকে হারিয়ে না ফেলি। সবার জন্য পেনশন, দরিদ্রের জন্য ঘর ইত্যাদি যেসব জনকল্যাণমূলক কার্যক্রম ছিল সেগুলো যেন আমরা বিসর্জন না দেই। ভালো মন্দের বিচার করা মন্দের থেকে ভালোটা আলাদা করার ক্ষমতা যদি নেতৃত্বের না থাকে সেই নেতৃত্ব কখনোই দূরদর্শী হয় না।
এখন হিন্দুরা প্রতিবাদ করতে শুরু করায় অনেকেই বলছে এতদিন চুপচাপ সব সহ্য করেছে এখন মিটিং মিছিল কেন? আসলে যেকোনো বিষয়েই গত পনের বছর কোথায় ছিলেন এই প্রশ্ন আজ প্রায় সবাইকে করা হচ্ছে। আমার মনে হয় বিষয়টি মনস্তাত্ত্বিক। এলাকার বড় মাস্তান এমনকি সবচেয়ে নিরীহ লোকের উপর হুমকি ধামকি করে যে কোনদিন কোন ঝামেলায় জড়িয়ে পড়ার কথা কল্পনায়ও ভাবে না। কেন? কারণ মাস্তানকে দেখাতে হবে সবাই তার কথায় ওঠ বস করে। একবার কেউ যদি ঘুরে দাঁড়ায় তখন আর ঘুরে দাঁড়ানোর মানুষের অভাব হয় না। কারণ সবাই ভুক্তভোগী, সবাই ক্ষুব্ধ। শুধু হিন্দুরা কেন একটা সময় প্রায় কেউই প্রতিবাদ করেনি পুলিশ, ছাত্র লীগ, হেলমেট লীগ ইত্যাদির আক্রমণের ভয়ে। কিন্তু একবার যখন দেখা গেল খুব অল্প শক্তি নিয়েও একটি সরকারকে ফেলে দেয়া যায় তখন অনেকেই জিতুক না জিতুক নিজেদের দাবি আদায়ের চেষ্টা করে। তাই হিন্দুদের মিটিং মিছিলকে আওয়ামী ষড়যন্ত্র না ভেবে তাদের দাবি দাওয়া গুরুত্ব সহকারে শোনা দরকার। কারণ এটা তো মিথ্যে নয় যে তারা প্রায় সব সময়ই রিসিভিং এন্ডে থাকে। সংখ্যায় যাই হোক না কেন কোন জাতির একটি অংশকে অবহেলা করে সেই জাতির সামগ্রিক সাফল্য আসতে পারে না। তাছাড়া দেড় থেকে দুই কোটি – সংখ্যাটা ফেলনা নয়, বিশ্বের অর্ধেকের বেশি দেশের জনসংখ্যা এর চেয়ে কম। তাই আমরা যদি সত্যিকার অর্থেই বৈষম্য মুক্ত, গণতান্ত্রিক, আধুনিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই তাহলে হিন্দু সহ সমস্ত গোষ্ঠীর নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করা এবং এদের দাবি দাওয়া গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা ছাড়া অন্য কোন পথ নেই। কিন্তু বর্তমানে যা ঘটছে তাতে মানুষ আধুনিক রাষ্ট্র গঠনে সরকারের ভূমিকায় সন্দিহান বলেই এই প্রতিবাদ। এখানে হিন্দুদের কথাটি উদাহরণস্বরূপ বললাম। এটা আসলে সবার সাথেই যায়। আমরা যখন হিন্দুদের দাবি দাওয়ার পেছনে ভারতের বা আওয়ামী লীগের হাত খুঁজি তখন বুঝতে হবে আমরা সমস্যার সমাধানের চেয়ে সেটা সরিয়ে রাখতে আগ্রহী। অর্থাৎ দায়িত্ব না নিয়ে এসব সমস্যা পরবর্তী শাসকদের জন্য রেখে দিতে আগ্রহী। এটা অনেকটা হোজা নাসিরুদ্দিনের গাধাকে মানুষ করার মত – ততদিনে হয় গাধা মরবে না হয় শাসক মরবে না হয় সে নিজে মরবে। কিন্তু সবার ভাগ্য হোজা নাসিরুদ্দিনের মত নয়। আওয়ামী লীগও দেশের সব কিছুর পেছনে বিএনপি জামাতের হাত দেখেছিল। তার ফলাফল সকলের জানা। তবে একই সাথে হিন্দু নেতাদের বুঝতে হবে অধিকার প্রশ্নে তাদের ঐক্য আশাজনক, কিন্তু অধিকার আদায়ের জন্য দাবি দাওয়া শুধু যুক্তিসঙ্গত হলেই চলবে না, হতে হবে পালনযোগ্য। ছোটখাটো সফল আন্দোলন অনেক বড় ব্যর্থ আন্দোলনের চেয়ে অনেক বেশী কার্যকর। দাবির ন্যায্যতার পাশাপাশি সেটা আদায় করার শক্তি, সামাজিক পরিস্থিতি সেসবও দেখতে হবে। অন্য দিকে সরকারকেও হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। কারণ দেশটা আমাদের সবার। দেশ গড়ার দায়িত্বও সবার। কথাটি শুধু সংখ্যালঘুদের ক্ষেত্রেই নয় সবার ক্ষেত্রেই সত্য। দূর দেশী কেউ সাহায্য করবে এই ভরসায় যদি প্রতিবেশীর সাথে ঝগড়া শুরু করি পস্তাতে হবে নিজেদেরকেই। দূরের বন্ধুরা আমাদের ভালোমন্দ ভাবে না, নিজের স্বার্থে আমাদের ঝগড়ায় জড়ায়। অবস্থা বেগতিক দেখলে তারা পালায়, আমাদের থাকতে হয়। আফগানিস্তান, ইউক্রেন – উদাহরণ ভুরি ভুরি। আজ দেশে বিভিন্ন গোষ্ঠীর যে সমস্যা তা শুধু ওই নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর নয়, সমস্যা দেশের, সমস্যা সবার। তাই চেষ্টা করতে হবে সকলে মিলে সবার জন্য গ্রহণযোগ্য সমাধান খোঁজার। বিভেদ নয় ঐক্যের ভিত্তিতে।
গবেষক, জয়েন্ট ইনস্টিটিউট ফর নিউক্লিয়ার রিসার্চ
শিক্ষক, রাশিয়ান পিপলস ফ্রেন্ডশিপ ইউনিভার্সিটি, মস্কো