চট্টগ্রামে ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সাথে শ্রম সংস্কার কমিশনের সাথে মতবিনিময় সভায় ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের উদ্বেগ ও পরামর্শ
গতকাল সকাল সাড়ে ১০টায় বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স এ্যাসোসিয়েশন এবং চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সাথে শ্রম সংস্কার কমিশনের এক মতবিনিময় সভা চট্টগ্রাম সার্কিট হাউস মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। কমিশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহাম্মদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত মতবিনিময় সভায় কমিশনের সদস্য ড. মাহফুজুল হক, তপন দত্ত, এ এন এম সাইফ উদ্দিন, অধ্যাপক জাকির হোসেন, সাকিল আকতার চৌধুরী,তাসলিমা আকতার এবং বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের সেক্রেটারী জেনারেল ফারুক আহাম্মদ, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বারের সহসভাপতি মাহাবুব চোধুরী, জাহাজভাঙা মালিক সমিতির উপদেষ্টা কামাল উদ্দিন আহমেদ, জাহাজভাঙা মালিক সমিতির প্রতিনিধি আমজাদ হোসেন চৌধুরী, চট্টগ্রাম চেম্বারের সহকারী সচিব আবু সায়েম, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সহসভাপতি সাজ্জাদ হোসেন প্রমুখ।
কমিশন প্রধান সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহাম্মদ বলেন, আমাদের অর্থনীতিকে গতিশীল করতে দেশের শ্রমমান উন্নত করতে হবে। তিনি বলেন, মালিক এবং শ্রমিক কেউ পরস্পরের প্রতিপক্ষ নয়। মালিক শ্রমিক কেউ কারো প্রতিপক্ষ নয়। শিল্প রক্ষা করে মালিক এবং শ্রমিকের স্বার্থ সমুন্নত রাখাই কমিশনের অন্যতম লক্ষ ও উদ্দেশ্য। তিনি মালিকদের দৃষ্টি আকর্ষন করে বলেন, একটা বিষয় সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে শ্রমিক অগ্রিম শ্রম দিয়ে তারপর মজুরি পায়। তাই কোন অজুহাতে শ্রমিকের মজুরি বকেয়া রাখা এবং বিলম্বে প্রদান করা গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের সেক্রেটারি জেনারেল ফারুক আহমেদ বলেন, ব্যবসায়ীরা আজ খোলা মনে তাদের বাস্তবভিজ্ঞতা এবং ব্যথার কথা তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের আর্থিক স্থিতিশীলতা এবং শ্রমিকদের মজুরি যোগান দেয়ার সক্ষমতা থাকা খুবই জরুরী। তিনি আরো বলেন, শ্রমিকের মজুরি সময়মত দেয়ার পরেও তার পরিবারের সুখ-দুঃখের খোঁজ খবর রাখাও একজন একজন ভালো ব্যবসায়ীর দায় রয়েছে।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বারের সহ-সভাপতি এ এম মাহাবুব চোধুরী বলেন, শিল্প এবং মালিক টিকে থাকার পরিবেশ তোরি করতে হবে। তিনি ব্যবসায়ীদের দুরাবস্থার কথা উল্লেখ করে জানান, আগামী ১/২ মাস পরে মালিকেরা শ্রমিকের মজুরি দিতে পারবেন কিনা সন্দেহ আছে। তিনি জানান, শ্রীলংকায় রাজনৈতিক অস্থিরতার কারনেই বাংলাদেশে তৈরি পোশাকের ব্যবসা এসেছিল। এখন বাংলাদেশেও অস্থিরতা চলছে। কোন দেশের নাম উল্লেখ না করে তিনি বলেন, পার্শ্ববর্তী একটি দেশে তৈরি পোশাক ব্যবসা ৩৫% বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আগে বন্দর থেকে মালামাল খালাস করতে সময় লাগতো ২/৩ দিন, এখন নানাবিধ নিয়মনীতি এবং প্রতিবন্ধকতার কারনে বন্দর থেকে মালামাল খালাস করতে এখন সময় লাগে ১৫/১৬ দিন। এতে দেশের মারত্মক ক্ষতি ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে। তিনি আরো বলেন, ব্যবসায়ীরা চাঁদাবাজি এবং মামলাবাজির শিকার হচ্ছে।
জাহাজভাঙা মালিক সমিতির উপদেষ্টা কামাল উদ্দিন বলেন, বর্তমানে ইয়ার্ডগুলো পরিবেশ এবং শ্রমিকবান্ধব। উন্নত প্রযুক্তির মেশিনারী ব্যবহারের কারনে শ্রমিকের কায়িক শ্রম অনেকাংশে কমে গেছে। তিনি ইয়ার্ড ভিজিট করে জাহাজভাঙা শিল্প সেক্টর সম্পর্কে সুপারিশ প্রণয়নের আহ্বান জানান।