শীর্ষ খবর:
চলমান সংবাদ

জাহাজ ভাঙা শিল্পে শ্রমিকদের পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা

-২০২৪ সালের জুলাই-ডিসেম্বর পর্যন্ত দুর্ঘটনার প্রতিবেদন উপস্থাপন


গতকাল রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর, সীতাকুণ্ডের ইপসা এইচআরডি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত একটি সভায়, বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিলস) ২০২৪ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত জাহাজ ভাঙা শিল্পে শ্রমিকদের দুর্ঘটনার বিস্তারিত প্রতিবেদন উপস্থাপন করেছে। প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন বিলসের পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা বিষয়ক তথ্য কেন্দ্রের সমন্বয়ক ফজলুল কবির মিন্টু।
এই সভায় উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন ট্রেড ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দ, জাহাজ ভাঙা শ্রমিক, সমাজ সেবা অধিদপ্তরের প্রতিনিধিরা এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডাররা। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সীতাকুণ্ড উপজেলার নির্বাহী অফিসার, কে এম রফিকুল ইসলাম। সভাপতিত্ব করেন জাহাজভাঙা শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন ফোরামের আহবায়ক তপন দত্ত, যিনি সদ্য গঠিত শ্রম সংস্কার কমিশনের সদস্যও।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, জাহাজ শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন ফোরামের যুগ্ম আহ্বায়ক এ এম নাজিম উদ্দিন সীতাকুণ্ড উপজেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা  লুতফুন্নেসা বেগম, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা তাজাম্মল হোসেন, কুমিরা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাংবাদিকদের পক্ষে বক্তব্য দেন সৌমিত্র চক্রবর্তী, লিটন কুমার চোধুরী, সঞ্জয় চৌধুরী, কৃষ্ণ চন্দ্র দাশ, মোঃ আবুল খায়ের, জাহাজভাঙা শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন ফোরামের সদস্য মাহাবুবুল আলম, দিদারুল আলম চৌধুরী, জাহাজভাঙা শ্রমিকনেতা মোঃ আলী, মোঃ ইদ্রিছ, মোঃ জামাল উদ্দিন, মোঃ হাসান প্রমুখ
২০২৪ সালের ২য় ৬ মাসে ১২টি দুর্ঘটনা ঘটে, যার মধ্যে ১টি দুর্ঘটনায় ৬ জন শ্রমিক নিহত হন এবং ১২টি দুর্ঘটনায় ২০ জন শ্রমিক আহত হন।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, শ্রমিকরা নিয়োগপত্র বা পরিচয়পত্র ছাড়াই কাজ করেন এবং শ্রমিকদের অধিকাংশই অদক্ষ ঠিকাদারের অধীনে নিয়োজিত। এছাড়া, শ্রমিকদের নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য সুবিধা ও মজুরি প্রদান নিয়ে অনেক সমস্যা রয়ে গেছে। ২০১৮ সালে ঘোষিত ন্যূনতম মজুরি আজও বাস্তবায়িত হয়নি।
তবে, ২০২৩ সালের জুন মাসে বাংলাদেশ হংকং কনভেনশন অনুস্বাক্ষর এবং কিছু শিপইয়ার্ডের গ্রিন ইয়ার্ডে রূপান্তরের মাধ্যমে শিল্পের উন্নতির নতুন আশা তৈরি হয়েছে।  এসব উন্নতির কারণে শ্রমিকদের চাকুরীচ্যুত হওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি পেয়েছে এবং বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা না হলে সামাজিক সংকট সৃষ্টি হতে পারে।
প্রতিবেদনে জাহাজভাঙা শিল্পের উন্নয়নে ১৫টি সুপারিশ করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে শ্রমিকদের জন্য বিশেষায়িত হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা, প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য প্রশিক্ষিত টীম গঠন, নিয়োগপত্র প্রদান, শ্রমিকদের জন্য জীবনধারণ উপযোগী মজুরি নিশ্চিত করা, এবং শ্রম আইন-বিধিমালা এবং আন্তর্জাতিক শ্রমমান অনুসরণ করে নিরাপদ কর্মপরিবেশ সৃষ্টি করা।
এছাড়া, দৈনিক ৮ ঘন্টার অতিরিক্ত কাজ নিষিদ্ধ করা এবং শ্রমিকদের প্রতি ঘন্টায় ১৫ মিনিট বিশ্রাম দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।