চলমান সংবাদ

হাসিনার ভারতে থাকার মেয়াদ বাড়লো

ঢাকার পাঠানো নোট ভার্বালের জবাবও এখনো দেয়া হয়নি। তবে সময় মতো উত্তর দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।

বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যার্পণ চেয়ে সম্প্রতি দিল্লিকে নোট ভার্বাল বা কূটনৈতিক নোট পাঠিয়েছিল ঢাকা। এখনো পর্যন্ত তার জবাব দেয়নি দিল্লি। প্রাপ্তি স্বীকার করেছে। তারই মধ্যে শেখ হাসিনার পাসপোর্ট বাতিল করেছে ঢাকা। এই পরিস্থিতিতে হাসিনার ভারতে থাকার মেয়াদ বৃদ্ধি করলো দিল্লি। ভারতের এই পদক্ষেপ হাসিনাকে ঘিরে দুই দেশের কূটনৈতিক টানাপড়েন আরো এক ধাপ বাড়ালো বলেই মনে করছে কূটনৈতিক মহল।

দিল্লির ফরেন রিজিওনাল রেজিস্ট্রেশন অফিসের মাধ্যমে হাসিনার ভারতে থাকার মেয়াদবৃদ্ধি করা হয়েছে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানিয়েছে। এর অর্থ, হাসিনা বৈধভাবে আরো কিছুদিন ভারতে থাকতে পারবেন। তবে কতদিনের জন্য এই মেয়াদবৃদ্ধি করা হয়েছে, তা জানানো হয়নি।

নাম প্রকাশ করা যাবে না এই শর্তে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক অফিসার ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ”হাসিনা যাতে বৈধভাবে ভারতে থাকতে পারেন, সে জন্যই এই মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে। এটি একটি রুটিন প্রক্রিয়া।”

এক সাবেক আইপিএস অফিসার এবং বাংলাদেশ বিষয়ক নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ”শেখ হাসিনা বিদেশি নাগরিক। ভারতে থাকতে হলে তার কিছু আইনি নিয়মকানুন থাকে। সেই নিয়ম মেনেই তার থাকার সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে বলে আমার ধারণা। এর মধ্যে কোনো অস্বাভাবিকতা নেই।” তিনি জানিয়েছেন, তসলিমা নাসরিনের ক্ষেত্রেও এই একই প্রক্রিয়া পালন করা হয়। নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে ভারতে থাকার মেয়াদবৃদ্ধি করা হয়। উল্লেখ্য, তসলিমা নাসরিন দীর্ঘদিন ভারতে আশ্রয় নিয়ে আছেন। একসময় পশ্চিমবঙ্গে থাকলেও এখন তিনি দিল্লিনিবাসী। কলকাতায় যাওয়ার ক্ষেত্রেও তার উপর নিষেধাজ্ঞা আছে।

শেখ হাসিনা এবং তসলিমার বিষয়টি অবশ্য এক নয়। হাসিনা ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়েছেন। তবে ওই অফিসারের বক্তব্য, বৈধভাবে থাকার আইনটি সকলের ক্ষেত্রেই সমান। এবং সেই আইন মেনেই হাসিনার থাকার মেয়াদবৃদ্ধি করা হয়েছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানিয়েছে, হাসিনার ভারতে থাকার বিষয়টি একটি আইনি প্রক্রিয়া। এরসঙ্গে কূটনীতির কোনো সম্পর্ক নেই। ঢাকা হাসিনার প্রত্যার্পণ চেয়ে যে নোট ভার্বাল পাঠিয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বিষয়টির আইনি দিকগুলিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যথাসময়ে তার উত্তর দেওয়া হবে জানানো হয়েছে। বস্তুত, এরই মধ্যে হাসিনাকে ফেরত পাওয়ার জন্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল। সে বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চায়নি দিল্লি। শুধু তা-ই নয়, হাসিনা-সহ ৯৭ জন ব্যক্তির পাসপোর্ট বাতিল করেছে বাংলাদেশ। এবিষয়েও ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কোনো মন্তব্য করতে চায়নি। বস্তুত, হাসিনার ভারতে থাকার মেয়াদবৃদ্ধির বিষয়টিও আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করেনি ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

এসজি/জিএইচ (আনন্দবাজার পত্রিকা)