চলমান সংবাদ

বিদেশি বিনিয়োগে বড় পতন, ৬ মাসে কমেছে ৭১ শতাংশ

বিদেশি বিনিয়োগে বড় ধরনের পতন হয়েছে। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) বিদেশি বিনিয়োগ আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে কমে চার ভাগের প্রায় এক ভাগে নেমেছে। এ সময় বিদেশি বিনিয়োগ আগের বছরের চেয়ে ৭১ শতাংশের বেশি কমে গেছে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্য–উপাত্ত বলছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে মাত্র ২১ কোটি ৩০ লাখ মার্কিন ডলারের বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে। গত অর্থবছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ৭৪ কোটি ৪০ লাখ ডলার।

গত রোববার প্রধান উপদেষ্টার কাছে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি অবহিত করে একটি প্রতিবেদন দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়। সেই প্রতিবেদনে বিদেশি বিনিয়োগের এই চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।

দীর্ঘদিন ধরেই বিদেশি বিনিয়োগের মন্দাভাব চলছে। ব্যবসায় পরিবেশবান্ধব পরিস্থিতির কোনো উন্নতি নেই। আবার স্থানীয় বা দেশি বিনিয়োগও খুব বেশি বাড়ছে না। এসব কারণে বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। দেশি শিল্পোদ্যোক্তারা বলছেন, দেশি বিনিয়োগ না বাড়লে বিদেশি বিনিয়োগও বাড়বে না।

বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘ব্যবসা সহজ করার ক্ষেত্রে আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা আছে। এ ছাড়া চলমান রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা আছে। তাই নতুন করে বিদেশি বিনিয়োগ আসছে না। এখানে যেসব বিদেশি বিনিয়োগ করেছে, তাদের অবণ্টিত মুনাফা আবার বিনিয়োগ করছে। যেখানে দেশের ভেতরে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি মাত্র ৭ শতাংশ, সেখানে বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা কঠিন।’

মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে হলে স্থিতিশীল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, দুর্নীতি, সুশাসন ও জবাবদিহি ঘাটতি—এসব সমস্যার সমাধান করতে হবে।

নতুন বিদেশি বিনিয়োগ যে বাড়ছে না, সেই চিত্রও উঠে এসেছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ওই প্রতিবেদনে। সেখানে বলা হয়েছে, ২০২০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত প্রতিবছর গড়ে দেড় শ কোটি ডলারে মতো বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে। এর মধ্যে ইকুইটি বিনিয়োগ বা নতুন বিনিয়োগের পরিমাণ মাত্র ৬৬ কোটি ৮০ লাখ ডলার।

অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুসারে, প্রান্তিক হিসাবেও চলতি অর্থবছরের বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে। প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) নতুন ও পুনর্বিনিয়োগ মিলে এসেছে প্রায় ১৫ কোটি ডলার। পরের প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) এসেছে প্রায় সাত কোটি ডলারের কাছাকাছি।

বাংলাদেশের এফডিআইয়ের বড় অংশই আগে থেকে দেশে বিনিয়োগ করা কোম্পানির আয় ও অবণ্টিত লাভের পুনর্বিনিয়োগের মাধ্যমে আসে।