চলমান সংবাদ

জাতীয় ভোটার দিবসে ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার চ্যালেঞ্জ

আজ ২ মার্চ, ২০২৫, বাংলাদেশের জাতীয় ভোটার দিবস পালিত হচ্ছে। এবারের প্রতিপাদ্য হচ্ছে “তোমার আমার বাংলাদেশে, ভোট দিব মিলেমিশে।” তবে, ভোটাধিকার নিশ্চিত করা এখনও দেশের প্রধান চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেছে। নির্বাচন কমিশন (ইসি) দীর্ঘ সময় ধরে ভোটারদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার নিশ্চয়তা দিতে পারেনি। ২০১৪ ও ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ নানা স্থানীয় নির্বাচনে অনিয়ম, ভোট কারচুপি এবং বিরোধী দলের অংশগ্রহণ না থাকায় নির্বাচন ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা হ্রাস পেয়েছে।

২০১৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রিসভা ১ মার্চকে জাতীয় ভোটার দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেয়। ২০১৯ সালে প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে দিবসটি পালন করা হয় এবং ২০২০ সাল থেকে এটি ২ মার্চ তারিখে উদযাপন করা হচ্ছে। এই দিবসটি উদযাপনের পাশাপাশি নির্বাচন কমিশন হালনাগাদ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করবে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, অতীত অভিজ্ঞতা থেকে দেখা গেছে, দলীয় সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনই সুষ্ঠু হয়নি এবং নির্বাচন কমিশনও স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারেনি। আগামী নির্বাচনটি অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হবে, যা সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের সম্ভাবনা কিছুটা বাড়িয়ে দিচ্ছে। তবে, পুলিশ ও প্রশাসনের সক্ষমতা এখনো প্রশ্নবিদ্ধ এবং তাদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হবে।

নির্বাচনবিশেষজ্ঞ আবদুল আলীম বলছেন, গত দেড় দশকে অনেক নাগরিক ভোটে আগ্রহ হারিয়েছেন এবং অনেকে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারেননি। ভোটারদের তালিকাভুক্তি একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা এবং একটি সমন্বিত নির্বাচনী নিরাপত্তাব্যবস্থা প্রণয়ন জরুরি।

এদিকে, নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম দাবি করেছেন, এবারের জাতীয় ভোটার দিবসের প্রতিপাদ্য মর্মার্থ হলো সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কোনো চ্যালেঞ্জ নেই। কমিশন একদম নিরপেক্ষভাবে একটি সর্বোৎকৃষ্ট নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।

তবে, নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার মনে করছেন, প্রয়োজনীয় সংস্কারের অভাব ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন সম্ভব নয়। তিনি বলেন, নির্বাচনী প্রক্রিয়া ও রাজনৈতিক সংস্করণে বেশ কিছু কাঠামোগত এবং আইনি সংস্কারের প্রয়োজন রয়েছে, যা কার্যকর করা না হলে সুষ্ঠু নির্বাচনের পথে বাধা সৃষ্টি হতে পারে।

এমন পরিস্থিতিতে, আগামী সংসদ নির্বাচন নিয়ে সন্দেহ ও সংশয় রয়ে গেছে, যদিও নির্বাচন কমিশন প্রস্তুতি নিচ্ছে। রাজনৈতিক অঙ্গন, প্রশাসন, এবং নির্বাচন কমিশনকে আরও কার্যকরভাবে কাজ করতে হবে, যাতে ভোটাধিকার সঠিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং জনগণের আস্থা ফিরে আসে।