শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক সৈয়দ জামিল আহমেদের পদত্যাগ
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক (ডিজি) সৈয়দ জামিল আহমেদ পদত্যাগ করেছেন, যার পেছনে অযাচিত হস্তক্ষেপের অভিযোগ রয়েছে। এই পদত্যাগের ঘটনা ঘটে ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, শুক্রবার সন্ধ্যায়, যখন তিনি শিল্পকলা একাডেমির ‘মুনীর চৌধুরী প্রথম জাতীয় নাট্যোৎসব’–এর সমাপনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে হঠাৎ পদত্যাগের ঘোষণা দেন।
সৈয়দ জামিল আহমেদ বলেন, তিনি স্বাধীনভাবে কাজ না করতে পারায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং মঞ্চে দাঁড়িয়ে শিল্পকলা একাডেমির সচিব মোহাম্মদ ওয়ারেছ হোসেনের হাতে পদত্যাগপত্র তুলে দেন। পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার পর তিনি গণমাধ্যমে জানান, মন্ত্রণালয়ের অযাচিত হস্তক্ষেপ, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, বাজেট কর্তন এবং একাডেমির অভ্যন্তরীণ দুর্নীতির কারণে তিনি এই পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।
এদিকে, সৈয়দ জামিল আহমেদের পদত্যাগের পরে সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে অভিযোগ করেছেন যে, সৈয়দ জামিল আহমেদের কিছু অভিযোগ সঠিক নয় এবং তাঁর পদত্যাগের সিদ্ধান্তের পেছনে হতাশা কাজ করছে। ফারুকী বলেন, “ভালো শিল্পী হওয়া এবং আমলাতন্ত্রে কাজ করার মধ্যে পার্থক্য রয়েছে, এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করার জন্য এক ধরনের ধৈর্য এবং ম্যানেজমেন্ট দক্ষতার প্রয়োজন।”
সৈয়দ জামিল আহমেদের পদত্যাগের পেছনের কারণ
পদত্যাগপত্রে সৈয়দ জামিল আহমেদ বলেন, তিনি সেপ্টেম্বর ২০২৪ সালে মহাপরিচালক পদে দায়িত্ব গ্রহণ করেন, শর্ত সাপেক্ষে যে শিল্পকলা একাডেমি একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করবে এবং মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ থাকবে না। তবে, তিনি অভিযোগ করেছেন, উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী এবং মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা তাঁর কাজের স্বাধীনতায় বারবার হস্তক্ষেপ করেছেন। তিনি উল্লেখ করেন, একাডেমির বাজেট কমিয়ে দেওয়া এবং বিভিন্ন আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে তার কাজের পরিবেশ নষ্ট হয়েছে।
ফারুকীর পাল্টা অভিযোগ
উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী তার ফেসবুক পোস্টে বলেন, “একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করার জন্য যে ধরনের ম্যানেজারিয়াল দক্ষতা প্রয়োজন, তা সহজে অর্জন করা যায় না।” তিনি আরও বলেন, “বিভিন্ন কাজের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে, এবং অনেক কিছুই এমন পরিস্থিতির কারণে হয়নি, যেগুলো জামিল আহমেদ সম্ভবত মেনে নিতে পারেননি।”
ফারুকী নিশ্চিত করেছেন, তিনি জামিল আহমেদের পদত্যাগ নিয়ে বিস্তারিত কিছু বলতে চাননি, তবে তিনি জানান, তাঁর অনেক অভিযোগ সঠিক নয়।
শেষ কথা
সৈয়দ জামিল আহমেদ একাডেমির মহাপরিচালক পদ থেকে পদত্যাগ করলেও, তিনি জানান, তার সৃজনশীল কাজের জন্য মন্ত্রণালয়ের সহায়তা পেলে তিনি খুশি হবেন। তবে, বর্তমান পরিস্থিতিতে তার লক্ষ্য পূরণ করা সম্ভব হয়নি, তাই তিনি পদত্যাগ করেছেন।