শ্বশুরবাড়িতে ঠাঁই না পেয়ে গায়ে কেরোসিন ঢেলে গৃহবধূর আত্মহত্যা, গ্রেপ্তার ৪
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে বিয়ের পরও শ্বশুরবাড়িতে ঢুকতে না দেওয়ায় রুপনা দাশ (৩৩) নামে এক গৃহবধূ গায়ে কেরোসিন ঢেলে আত্মহত্যা করেছেন। সোমবার (১৯ জুলাই) বিকেলে ধূম ইউনিয়নের দক্ষিণ ধূম গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) ভোর ৬টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান। এ ঘটনায় নিহতের বোন বাদী হয়ে থানায় মামলা করলে মিরসরাইয়ের জোরারগঞ্জ থানা পুলিশ রুপনার স্বামী রুপম কুমার দে, শশুর রাখাল কুমার দে, শাশুড়ি বেলা রানি দে, ভাসুর কাঞ্চন কুমার দে ও জা উর্মিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠান। মামলার বাদী নিহত গৃহবধূর বড় বোন বিউটি দাস জানান, তার বোন রুপনাকে রুপম বিয়ে করে তিন বছর আগে। বিয়ের এক বছর পর তাদের কোলজুড়ে আসে একটি কন্যা সন্তান। তার নাম রাখা হয় প্রমা দে। মেয়েটির বয়স এখন দুই বছর। তিনি অভিযোগ করেন, রুপনা রুপমকে বিয়ে করার পর একাধিকবার শশুর বাড়িতে একটু ঠাঁয় চায়। কিন্তু রুপমের বাবা শিক্ষক রাখাল কুমার দে তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। ঘটনার দিন বিকেল আড়াইটার দিকে রুপনা তার কন্যা সন্তানকে নিয়ে শশুর বাড়িতে গেলে পুনরায় তাড়িয়ে দেয়। এরপর বিষয়টি স্থানীয় ধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর ভূঁইয়াকে জানায়। তিনি সুরাহারও আশ্বাস দেন। কিন্তু এর এক ঘণ্টা পর স্থানীয় শান্তিরহাট বাজার থেকে একটি ব্যাগে ভরে কেরোসিন কিনে পুনরায় শশুর বাড়ি গিয়ে আশ্রয় চান এবং তার কন্যা শিশুর অধিকার চান। এরপরও পাশান শশুর-শাশুড়ি স্থান দেয়নি রুপনা ও তার কন্যাকে। বিকেল ৪টার দিকে বাড়ির উঠানে দাড়িয়ে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়ে আত্মহত্যা করে রুপনা। এসময় তার কন্যা সন্তানও সাথে ছিলো। তবে শিশুটি আগুনের ভয়ে মায়ের কাছ থেকে সরে যাওয়ায় অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পায়। ধূম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গীর ভূঁইয়া জানান, একটি মেয়ে গৃহবধূর দাবি নিয়ে শ্বশুর বাড়িতে অবস্থান নিলে বাড়ির লোকজন বিষয়টি আমাকে জানালে আমি গ্রাম পুলিশ পাঠাই। তারা মেয়েটিকে পরিষদে আসতে বললে সে আসতে রাজি হয়নি। পরে শুনলাম নির্মমভাবে মেয়েটি আত্মহত্যার চেষ্টা চালায় এবং হাসপাতালে মারা যায়। মিরসরাইয়ের জোরারগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ নূর হোসেন মামুন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, সোমবার বিকালে ধূম ইউনিয়নের দক্ষিণ ধূম গ্রামে গৃহবধূ রুপনা দাস নিজের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুনে দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। পরে তাকে চমেক বার্ন ইউনিটে ভর্তি করালে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার ভোরে মারা যায়। এ ঘটনায় রুপনা দাসের স্বামী, শ্বশুর,শ্বাশুড়ি, ভাসুর ও ভাসুরের স্ত্রীকে আটক করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় নিহত গৃহবধূ রুপনা দাসের বড় বোন বিউটি দাস বাদী হয়ে জোরারগঞ্জ থানায় একটি মামলা (যার নম্বর ৭) দায়ের করেছেন। # ১৯.০৭.২০২২ চট্টগ্রাম #