চট্টগ্রামে ফের অস্থির চালের বাজার
চট্টগ্রামে চালের বাজারে ফের অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। কিছুদিন আগে এক দফা দাম বৃদ্ধির পর সহনীয় পর্যায়ে আসে। নতুন করে আবার দাম বাড়ছে। যেন অস্থিরতা কাটছেই না। চালের মজুত পর্যাপ্ত থাকার পাশাপাশি সরকার চাল আমদানির অনুমতি দেয়ার পরও কমছে না চালের দাম। উলটো বাড়ছে। সপ্তাহের ব্যবধানে সব ধরনের চালের দাম কেজিতে অন্তত দুই থেকে চার টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। পাইকারি বাজারে ৫০ কেজির চালের বস্তার দাম ১০০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। খুচরা বাজারে দাম আরও বেশি। দাম কমাতে সরকার নানামুখী উদ্যোগ নিলেও সিন্ডিকেটের কারণে স্বস্তিতে নেই ভোক্তা। দাম বৃদ্ধির জন্য পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা দুষছেন একে অপরকে। এদিকে চালের দাম বৃদ্ধিতে ভোগান্তিতে পড়েছে মধ্যবিত্ত ও সাধারণ মানুষ। ক্রেতাদের অভিযোগ, সিন্ডিকেটের কারসাজির কারণেই চালের দাম বাড়ছে। প্রশাসন কড়া নজরদারি করলে ভাঙবে সিন্ডিকেট। দেশের ভোগ্যপণ্যের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের চালের আড়তদাররা বলছেন, ইতিমধ্যে যেসব চাল আমদানি করা হয়েছে তা মজুত করে রেখেছেন ব্যবসায়ীরা। আবার ডলারের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় নতুন করে চাল আমদানি করছেন না আমদানিকারকরা। খুলছেন না এলসি। মিলাররা বাজার থেকে চাল কিনে আগেই মজুত করে রেখেছেন। তারা সরবরাহ না করায় অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে চালের বাজার। খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, পাইকারদের কাছ থেকে চড়া দামে কিনে কম দামে বিক্রির সুযোগ নেই। পাইকারি বাজারে বর্তমানে মোটা চাল বি-২৮ ও পাইজাম ৫০ কেজির বস্তা ২ হাজার ৫০০ থেকে দুই হাজার ৫২৫ টাকায়। গত সপ্তাহে ছিল ২ হাজার ৩০০ টাকা। চিকন চাল মিনিকেট বস্তা তিন হাজার থেকে ৩ হাজার ২৫০ টাকায়। একই চাল গত সপ্তাহে ছিল ৩ হাজার ১০০ টাকা। নাজিরশাইল বস্তা ৩ হাজার ২৫০ থেকে ৩ হাজার ৪০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। যা গত সপ্তাহে ছিল ৩ হাজার ২ টাকায়। আর খুচরা বাজারে মোটা গুটি স্বর্ণার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৮-৫৩ টাকায়। পাইজাম ও বিআর-২৮ চালের কেজি মিলছে ৫৩-৬০ টাকায়। মানভেদে মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে ৬৫-৭২ আর নাজিরশাইলের দাম পড়ছে ৭৫-৮৫ টাকা কেজি। চট্টগ্রামের চালের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ, পাহাড়তলী ও চাক্তাই চালপট্টিতে উৎপাদিত ও আমদানিকৃত চালের বিশাল মজুত রয়েছে। অতি মুনাফার লোভে সরবরাহ কমিয়ে দেয়ায় পাইকারি বাড়ছে চালের দাম। এদিকে পাইকারি বাজারে দাম বৃদ্ধির ফলে খুচরা বাজারেও চালের দাম বেড়েছে। পাইকারি বাজারের কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। খাতুনগঞ্জের আড়তদার সিরাজুল ইসলাম জানান, ডলারের উচ্চমূল্য এবং ভারতে চালের দাম বাড়তি থাকার কারণে চাল আমদানিতে খরচ বেড়ে গেছে। যেসব চালের চাহিদা রয়েছে সেগুলো একটি চক্রের মাধ্যমে গুদামজাত হয়ে যাচ্ছে। ফলে চাহিদামতো চাল পাওয়া যাচ্ছে না। বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি হওয়াতে দামবৃদ্ধির এমন অবস্থা তৈরি হয়েছে। এছাড়াও উত্তরবঙ্গের মিলাররা প্যাকেটজাতকরণ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে চাল দিচ্ছে। ফলে চাহিদার একটি অংশ সেখানে চলে যাচ্ছে। সেখানে মধ্যস্বত্বভোগী একটি চক্র চাল গুদামজাত করে রেখে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করেছে। এ কারণে চালের বাজার অস্থির। # ০৪.০৮.২০২২ চট্টগ্রাম #