মাতারবাড়ি জেটিতে ভিড়লো শততম জাহাজ
মাতারবাড়ি জেটিতে ভিড়লো শততম জাহাজ। আজ বুধবার (২৪ আগস্ট) বিকেলে শততম জাহাজ হিসেবে ‘এমভি হোসি ফরচুন’ মাতারবাড়ি জেটিতে ভিড়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা। চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুক জানান, মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের জেটিতে ২০২০ সালের ২৯ ডিসেম্বর প্রথম বার্থিং করেছিল পানামা পতাকাবাহী বাণিজ্যিক জাহাজ ‘ভেনাস ট্রায়াম্প’। এরপর নির্মিত হয় দ্বিতীয় জেটি যাতে ২০২১ সালের ১৫ জুলাই জাহাজ বার্থিং শুরু হয়। ‘দ্য নেক্সট পাওয়ার অ্যান্ড পোর্ট হাব’ খ্যাত এই মাতারবাড়ি জেটিতে শততম জাহাজ ভিড়েছে। বন্দরের অভিজ্ঞ পাইলট মো. নূর আলম সিদ্দিকী এমভি হোসি ফরচুন জাহাজটি বহির্নোঙর থেকে চালিয়ে মাতারবাড়ি অয়েল জেটিতে নিয়ে আসেন। বিকেল ৫টার দিকে জাহাজটির বার্থিং সম্পন্ন হয়। এ কাজে বন্দরের শক্তিশালী টাগ ‘কাণ্ডারী ১০’ সহায়তা করে। বন্দর সূত্র জানায়, ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রীর জাপান সফরের সময় জাপানের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের উন্নয়নের বিষয়ে বে অব বেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রোথ বেল্ট (বিগ-জি) ইনিশিয়েটিভ ঘোষণার প্রেক্ষিতে কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়িতে কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। পরবর্তীতে মাতারবাড়ীতে বাণিজ্যিক বন্দরসহ বিভিন্ন প্রকল্প নেওয়া হয়। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ও কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিপিজিসিবিএল) আন্তরিক প্রচেষ্টায় কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জেটিতে ইতোমধ্যে ৯৯টি সমুদ্রগামী জাহাজ হ্যান্ডলিং কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে যা রাজস্ব আয়ের মাধ্যমে জাতীয় অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করেছে। এ পর্যন্ত প্রায় ১ লাখ ১৭ হাজার ৯১ টন পণ্য হ্যান্ডলিংয়ের মাধ্যমে বন্দরে কোষাগারে রাজস্ব বাবদ আনুমানিক ২ কোটি ৮ লাখ ৬ হাজার ২৩০ টাকা জমা হয়েছে যা উত্তরোত্তর বাড়ছে। কক্সবাজারের মাতারবাড়িতে দেশের প্রথম গভীর সমুদ্রবন্দরের প্রথম পর্যায়ের নির্মাণকাজ সম্পন্ন হবে ২০২৫ সালে এবং বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জাহাজ ভিড়বে এ জেটিতে। বর্তমানে সিপিজিসিবিএল নির্মিত জেটিতে ঢোকার জন্য চ্যানেলের প্রশস্থতা ২৫০ মিটার থেকে ৩৫০ মিটারে উন্নীত করা হয়েছে। এই চ্যানেল বা প্রবেশপথ দিয়েই বঙ্গোপসাগর থেকে জাহাজ বন্দর জেটিতে ঢুকবে এবং আগামী বছর মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রে আনুমানিক ডিডব্লিউটি ৮০ হাজার প্যানাম্যাক্স সাইজের কয়লা বহনকারী জাহাজ আসার কথা রয়েছে। এ ছাড়া, উক্ত অফশোর এলাকায় বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন কর্তৃক স্থাপিত এসপিএম প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষের দিকে। যার কমিশনিং আগামী নভেম্বর নাগাদ হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। চ্যানেলটি নির্মাণের সময়কাল থেকে অদ্যাবধি সিপিজিসিবিএলের নির্মাণসামগ্রী বহনকারী আগত বৈদেশিক জাহাজগুলো হ্যান্ডলিং ও কার্গো হ্যান্ডলিং পরিচালনা কাজে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ টাগ, পাইলটেজ ও স্টিটিভিডোরিং সেবা দিয়ে আসছে। বন্দরের পাইলটদের দক্ষতা, প্রয়োজন অনুযায়ী টাগ সহায়তার কারণে এ চ্যানেলে এখন পর্যন্ত কোনো নৌ দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়নি। এমনকি বন্দরের নিবিড় তত্ত্বাবধানের কারণে এ চ্যানেলে আসা জাহাজগুলোতে কোনো রকম চুরি, ডাকাতি বা অপ্রীতিকর কোনো ঘটনা ঘটেনি এবং আইএসপিএস কার্যক্রমের কোনোরূপ ব্যত্যয় হয়নি। # ২৪.০৮.২০২২ চট্টগ্রাম #