বাড়তি দামে চিকিৎসাসামগ্রী ক্রয়ে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ দুদক’র মামলায় চট্টগ্রামের সাবেক সিভিল সার্জন কারাগারে
চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের জন্য বাড়তি দামে চিকিৎসাসামগ্রী কিনে নয় কোটি টাকার বেশি আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের করা মামলায় চট্টগ্রামের সাবেক সিভিল সার্জন ডা. সরফরাজ খান চৌধুরীকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। রোববার (২৮ আগস্ট) চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ ও বিশেষ জজ বেগম জেবুননেছার আদালতে আত্মসমর্পন করে স্থায়ী জামিনের আবেদন করেন সরফরাজ খান। আদালত তা নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এর আগে এই মামলায় একই আদালতে অভিযোগপত্র গ্রহণ করা হয়। দুদক আইনজীবী কাজী ছানোয়ার আহমেদ লাভলু বলেন, ডা. সরফরাজ খান চৌধুরী বাবুল অভিযোগপত্র জমা দেয়া পর্যন্ত জামিনে ছিলেন। যেহেতু আদালতে অভিযোগপত্র জমা পড়েছে তিনি আজ হাজির হয়ে স্থায়ী জামিনের আবেদন করেন। আদালত তা নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে প্রেরণ করেন। একই সঙ্গে অন্য ৪ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দিয়েছেন। মামলার অভিযোগপত্রটি গ্রহণ করেছেন আদালত। আসামিদের মধ্যে বেঙ্গল সায়েন্টিফিক অ্যান্ড সার্জিক্যাল কোম্পানির স্বত্বাধিকারী মো. জাহের উদ্দিন সরকার জামিনে এবং বাকি ৫ জন পলাতক রয়েছেন। আদালত সূত্র জানান, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের জন্য বাড়তি মূল্যে যন্ত্রপাতি ক্রয়ের অভিযোগে ২০১৯ সালের ২৫ নভেম্বর দুদক চট্টগ্রাম-১’র সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ সিরাজুল হক বাদি হয়ে ডা. সরফরাজসহ সাতজনকে আসামি করে মামলা করেন। যন্ত্রপাতি কেনায় অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে দেশি দাম দেখানো হয়েছে- অভিযোগ পেয়ে দুদক অনুসন্ধানে নামে। এর প্রেক্ষিতে একাধিক বিশেষজ্ঞের মাধ্যমে যন্ত্রপাতির বাজার দর নিরূপণ করা হয়। মামলার এজাহারে বলা হয়, একটি এমআরআই মেশিনের বাজারমূল্য প্রায় দুই কোটি টাকা হলেও সেটি কেনা হয় ৬ কোটি ১৫ লাখ ৩০ হাজার ৪২৫ টাকায়। একইভাবে চারটি কালার ডপলার কেনা হয় ২ কোটি ৬০ লাখ টাকায়। যদিও এই মেশিনের দাম মাত্র ৯৮ লাখ টাকা। আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে বাজারমূল্যের চেয়ে দুই-তিনগুণ বেশি দাম দেখিয়ে মোট ৯ কোটি ১৫ লাখ ৩০ হাজার ৪২৫ টাকা সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। ২০২০ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি উচ্চ আদালতের নির্দেশে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পন করলে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল ডা. সরফরাজ খান চৌধুরী বাবুলকে। পরে তিনি জামিনে মুক্ত হন। এ মামলায় সম্প্রতি আদালতে অভিযোগপত্র দেয় দুদক। মামলার অন্য আসামিরা হলেন- চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট (মেডিসিন) ডা. মো. আব্দুর রব, জুনিয়র কনসালটেন্ট (অর্থোপেডিক সার্জারি) ডা. মো. মইন উদ্দিন মজুমদার, সিনিয়র কনসালটেন্ট (সার্জারি) ডা. বিজন কুমার নাথ, যন্ত্রপাতি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বেঙ্গল সায়েন্টিফিক অ্যান্ড সার্জিক্যাল কোম্পানির স্বত্বাধিকারী মো. জাহের উদ্দিন সরকার, মেসার্স আহম্মদ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মুন্সী ফারুক হোসেন এবং এএসএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও আফতাব আহমেদ।
# ২৮.০৮.২০২২ চট্টগ্রাম #