চলমান সংবাদ

কী শর্তে আইএমএফ-এর কাছ থেকে দ্বিতীয় কিস্তির ঋণ?

ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি ছাড় নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে সমঝোতা হয়েছে আইএমএফ প্রতিনিধি দলের (রিভিউ কমিশন)৷ বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হক বৃহস্পতিবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানিয়েছেন৷

 এখন আইএমএফের  বোর্ড অনুমোদন করলে ডিসেম্বর নাগাদ দ্বিতীয় কিস্তির অর্থ পাবে বাংলাদেশ৷

৪ অক্টোবরে আসা আইএমএফ রিভিউ মিশনের কাজ বৃহস্পতিবার শেষ হয়েছে৷ প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সঙ্গে বৃহস্পতিবার সমাপনী সভা করে৷ এরপর বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক আইএমএফের সঙ্গে বাংলাদেশের সমঝোতা কথা জানিয়ে  বলেন, “আমাদের প্রস্তাবে তারা রাজি হয়েছেন৷ দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার আগামী ডিসেম্বরে পেতে আমরা আশাবাদী৷”

আইএমএফ এর বিবৃতিতে বলা হয়ছে, “প্রথম কিস্তির রিভিউ সম্পন্ন করার জন্য যেসব নীতি গ্রহণ প্রয়োজন, সেসব বিষয়ে বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আইএমএফ কর্মকর্তাদের বৈঠকে ঐকমত্য হয়েছে৷” আইএমএফর মিশন প্রধান রাহুল আনন্দ বলেন, “কর্মকর্তা পর্যায়ের বৈঠকের এই সিদ্ধান্ত এখন আইএমএফ বোর্ডে তোলা হবে অনুমোদনের জন্য৷”

তবে কেউ স্পষ্ট করেননি যে কোন বিষয় নিয়ে সমঝোতা বা ঐক্যমত্য হয়েছে৷ শর্তপূরণের ব্যাপারে কী হয়েছে৷ আইএমএফের শর্তপূরণে বাংলাদেশ কীভাবে কাজ করবে৷

বিশ্লেষকেরা বলছেন, সম্ভবত আইএমএফ রিজার্ভ ও রাজস্ব আদায়ের বিষয়ে বাংলাদেশকে কিছুটা ছাড় দিয়েছে৷ তবে আরো যে ঋণ বাকি আছে তা পেতে বাংলাদেশকে পর্যায়ক্রমে শর্ত পূরণ করতে হবে৷ আর এখনো আইএমএফের বোর্ডের ওপর ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি পাওয়া নির্ভর করছে৷ তবে রিভিউ মিশন অনুমোদন করলে বোর্ড সেটাই অনুমোদন করে৷ এটাই প্রচলিত নিয়ম৷ কমিটির পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট যখন প্রকাশ হবে তখন কোন কোন বিষয়ে, কী শর্তে সমঝোতা হয়েছে তা জানা যাবে বলে জানান তারা৷

চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারি্তে আইএমএমএফ বাংলাদেশের জন্য ৪৭০ কোটি ডলার  ঋণ অনুমোদন করে৷ ২.২ শতাংশ সুদে  মোট সাত কিস্তিতে ৪২ মাসে এই ঋণ দেয়ার কথা বলা হয়৷ গত ফেব্রুয়ারিতে  ঋণের প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬০ লাখ ডলার পায় বাংলাদেশ৷ আগামী নভেম্বরে দ্বিতীয় কিস্তির ৬৪ কোটি ১০ লাখ ডলার পাওয়ার কথা ছিলো৷ এখন ডিসেম্বরে সেটা পাওয়া যেতে পারে৷

আইএমএফ এই  ঋণ দেয়ার জন্য বেশ কিছু শর্ত বেধে দেয়৷ এর মধ্যে অন্যতম হলো রিজার্ভ থাকতে হবে ২৬ বিলিন ডলার এবং কর-জিডিপির অনুপাত ০.৫ শতাংশ বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে৷ আরো যেসব শর্ত তা  হলো, রিজার্ভের হিসেব করতে হবে আইএমএফের অনুসৃত পদ্ধতিতে, বৈদেশিক মুদ্রার দর বাজারের ওপর ছেড়ে দেয়া, খেলাপি ঋণের পরিমান কমিয়ে আনা৷ বাংক ও আর্থিক খাতের সংস্কার৷ রাজস্ব প্রশাসনের দক্ষতা এবং আয় বাড়ানো৷ জ্বালানি পণ্যের দাম সমন্বয়৷ এসবের জন্য সময়ও বেধে দেয়া হয়৷