২৮ ছাত্রসংগঠনের ঐক্যবদ্ধ মঞ্চ, দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় দৃঢ় সংকল্প
দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার বিষয়ে মতবিনিময় সভা করেছে ২৮টি ছাত্রসংগঠনের নেতারা। তাঁরা ঐক্যবদ্ধভাবে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে কোনো আঘাত এলে জীবন দিয়ে হলেও তা প্রতিরোধ করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত রাজধানীর কাঁটাবনের একটি রেস্তোরাঁয় আয়োজিত এই সভায় উপস্থিত ছিলেন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্র ফেডারেশন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টসহ বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতারা। তবে ইসলামী ছাত্রশিবির এই সভায় অংশ নেননি, যা নিয়ে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন জানিয়ে বলেন, বিভিন্ন মতের কারণে তারা এতে উপস্থিত হয়নি।
এদিনের মতবিনিময় সভায় প্রধান আলোচ্য বিষয় ছিল দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা, গণ-অভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করা এবং ছাত্র সংসদ নির্বাচন বিষয়ক আলোচনা। পাশাপাশি, তারা অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী ছাত্রসংগঠনগুলোর মধ্যে ঐক্য বজায় রাখার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, এই সভায় ছাত্রনেতারা বলেন, “গণ-অভ্যুত্থানের পর ফ্যাসিস্ট হাসিনার সরকার পতন হয়েছে এবং দেশের জনগণ দীর্ঘ ১৫ বছর ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছে। ভারতও বিভিন্নভাবে এই সরকারের প্রতি সহায়তা করলেও ব্যর্থ হয়েছে।” তারা আরও বলেন, “দেশের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ছাত্রসমাজ একাত্ম রয়েছে এবং কোনো ধরনের আক্রমণ বা উসকানির বিরুদ্ধে তারা প্রতিরোধ গড়বে।”
সভায় তাদের পক্ষ থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ দাবিও উঠেছে, যেমন- “জুলাই অভ্যুত্থানে গণহত্যার বিচার, আহতদের সুচিকিৎসা, নিহতদের পুনর্বাসন, এবং ছাত্র রাজনীতির গণতান্ত্রিক সংস্করণ নিশ্চিত করা।”
এছাড়া, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ভূমিকা নিয়েও সমালোচনা করেছেন ছাত্রনেতারা। তারা অভিযোগ করেন, এই প্ল্যাটফর্মের নেতারা বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনগুলিকে বিভক্ত করার চেষ্টা করছে এবং জাতীয় ঐক্যের মধ্যে ফাটল সৃষ্টি করছে।
এছাড়া, সভায় অংশ নেওয়া অন্যান্য সংগঠনগুলো হলো বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল, ছাত্রপক্ষ, ছাত্র অধিকার পরিষদ, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, বিপ্লবী ছাত্র যুব আন্দোলন, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন, ভাসানী ছাত্র পরিষদ, নাগরিক ছাত্র ঐক্য, জেএসডি ছাত্রলীগ, ছাত্রলীগ (বিসিএল), রাষ্ট্র সংস্কার ছাত্র আন্দোলন, ইসলামী ছাত্রসমাজ এবং জাতীয় ছাত্রসমাজ (পার্থ)।
সভা শেষে ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফ সাংবাদিকদের জানান, “দেশের সার্বভৌমত্ব এবং গণতন্ত্র রক্ষায় ছাত্রসমাজ একত্রিত হয়ে সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করবে।”